বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে ১১ সপ্তাহের লকডাউন তুলে নেয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসায় গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে উহান থেকে বাইরে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়।
আজ বুধবার উছাং রেলস্টেশন, উহান স্টেশন ও হানখৌ স্টেশনগুলো যাত্রীদের জন্য পুনরায় খুলে দেওয়া হয়। শহরের ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন চেকপয়েন্ট, হাইওয়ে, বিমানবন্দর, রেলওয়ে ও নৌ জেটিতে বসানো নিরাপত্তা চৌকিগুলো তুলে দেয়া হয়েছে। যাত্রীরা স্বাস্থ্য পরীক্ষার গ্রীনকোড দেখানো এবং শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ সাপেক্ষে ট্রেনে চড়ে দেশের অন্যান্য স্থানে যেতে সক্ষম হচ্ছেন।
বার্তাসংস্থা শিনহুয়া জানিয়েছে, আজ প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ ট্রেনে করে উহান ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উহান তিয়ানহে বিমানবন্দরে ফ্লাইট চালু হওয়ায় ইতোমধ্যে ১০ হাজারেরও বেশি পর্যটক শহরটি ছেড়েছেন।
গত ২৩ জানুয়ারি মহামারি কোভিড-১৯ এর ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে উহান শহরবসীদের নিরাপদ রাখতে সেখানকার গণপরিবহন এবং সব বিমান ও ট্রেন চলাচলের বন্ধ করে দিয়ে ট্র্যাফিক বিধিনিষেধ ঘোষণা করা হয়।
চীনের রেলপথ কোম্পানির উহান শাখা অফিসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, লকডাউন তুলে নেয়ার পর ২৭৬টি ট্রেন উহান থেকে চীনের শাংহাই, শেনচেন, ছেংতু ও ফুচৌসহ বিভিন্ন এলাকার উদ্দেশ্য যাত্রা করে। টিকিট বিক্রির পরিমাণ থেকে জানা গেছে, ৮ এপ্রিল প্রায় ৫৫ হাজার যাত্রী উহান থেকে ট্রেনে করে বিভিন্ন এলাকায় যাবেন। এদের মধ্যে ৪০ শতাংশ পার্ল নদীর বদ্বীপ এলাকার শহরে যাবেন।
দীর্ঘ প্রায় তিন মাসের অবরুদ্ধ জীবনকে ত্যাগের দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন উহানবাসী। লকডাউনের শুরুর দিকে চিকিৎসা সরঞ্জামসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের সরবরাহে সমস্যা দেখা দিলেও আস্তে আস্তে তা ঠিক হতে থাকে। শুরুর সময়টাতে সবাই ধৈর্য্য ধরে সামাজিক বিচ্ছিন্নকরণ প্রক্রিয়া মেনে চলায় মহামারিকে নিয়ন্ত্রণে আনা সহজ হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।