জাতীয়, অপরাধ

ছিনতাইয়ের টাকায় বান্ধবী ও প্রেমিকার সাথে প্রমোদভ্রমণ

ময়ূখ

ডিবিসি নিউজ

বুধবার ১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১০:১৫:২৭ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

ছয় মাস আগে পরিকল্পনা। পরে হাতুড়ি পেটা করে ৩৫ লাখ টাকা ছিনতাই। সেই টাকা দিয়ে বান্ধবী ও প্রেমিকার জন্য কেনাকাটা, প্রমোদভ্রমণ। মাত্র পনের দিনে ১০ জনে খরচ করেন পুরো টাকা।  

বয়সে কিশোর ও তরুণ রাজধানীতে ছিনতাইয়ে জড়িত এ চক্রটিকে পুলিশের হাতে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে মেলে এসব তথ্য। পুলিশ বলছে, তাদের কেউ কেউ কলেজ পড়ুয়া ও ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান।

১১ই জানুয়ারি সকাল ১০টায় কারওয়ানবাজারের একটি বুথে টাকা জমা দেয়ার সময় ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা; হঠাৎ টাকার ব্যাগ হাতে থাকা ব্যক্তিকে পাকড়াও। হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত। অজ্ঞান হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ার পর, টাকাভর্তি ব্যাগ নিয়ে মোটরসাইকেলে এলাকা ত্যাগ। ঘটনা মাত্র কয়েক মিনিটের।  

ভুক্তভোগী জানান, বুথে টাকা জমা দিতে যাওয়ার সময় তার কাছে থাকা ৩৫ লাখ টাকা ছিনতাইকারীরা নিয়ে যায়।

প্রকাশ্যে এত বড় ছিনতাই। মামলার পর অভিযানে নামে পুলিশ। ছিনতাইয়ের স্পট ও আশপাশ এলাকার ৩২৫টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্নেষণ চলে সাত দিন। একটি ফুটেজে মেলে- ঘটনাস্থল থেকে মোটরসাইকেলে হাতিরঝিল মধুবাগের দিকে যাচ্ছে ছিনতাইকারীরা। তদন্তের ক্লু এতটকুই। 

পরে তথ্য মেলে একটি মোটরসাইকেলের। যার সূত্র ধরেই উন্মোচিত হয় ছিনতাই রহস্য। ঘটনায় জড়িত ১০ জনই বয়সে তরুণ। এরমধ্যে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, ঘটনার সময় যে মোট্র সাইকেলটি ব্যবহৃত হয়েছে সেটা ধরেই মূলত আমরা তাদের তথ্য পেয়ে যাই। তারা প্রায় ৬-৭ মাস ধরে পরিকল্পনা করেছে।" 

জিজ্ঞাসাবাদে ছিনতাইয়ের ঘটনা ও অন্যান্য তথ্য জেনে তাজ্জব বনে গেছে পুলিশ। বিপ্লব বিজয় তালুকদার জানান, ওই চক্র ইমো বা হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলতো। মোবাইলফোনে কোনো কথা বলতে না। 

প্রথমে সদরঘাট থেকে লঞ্চে চাঁদপুর, ঢাকায় ফিরে নিউমার্কেটে কেনাকাটা শেষে সিলেট যাত্রা। সবশেষ কক্সবাজারে ১০ দিন অবস্থান। টাকা খরচেও ছিল প্রতিযোগিতা। একজন একদিনেই প্রেমিকার জন্য কেনে ১২ জোড়া জুতা ও মোবাইল ফোন। 

পুলিশ বলছে, পুরো ঘটনার পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে ছিল হাসানুজ্জামান জনি। ফলে ৩৫ লাখের ৮ লাখই পায় সে। দলের অন্যদের মধ্যে সাগর ও শিহাব পায় পাঁচ লাখ করে। বাকি টাকার ভাগ পায় দলের অন্য সদস্যরা। 
 
উঠতি বয়সী এসব তরুণ-তরুণী- এতদিন বাসার বাইরে থাকলেও, পরিবারের কেউ তা আমলে নেয়নি। পুলিশ বলছে, এরকম ঘটনা উদ্বেগের। 

আরও পড়ুন