বিনোদন, সংস্কৃতি

ছুটির দিনে জমজমাট পূর্বাচল বাণিজ্য মেলা

Faruque

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ১৫ই জানুয়ারী ২০২২ ০৯:৪৫:৫৯ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা যেন হয়ে উঠেছে এক টুকরো অবকাশ যাপন কেন্দ্র। যেখানে ক্রেতা-দর্শনার্থী পছন্দের পণ্য কেনার পাশাপাশি, স্বাদ নিতে পারছেন বৈচিত্র্যময় খাবারের। খাবারের মান নিয়ে সন্তুষ্ট হলেও, দাম বেশি রাখার অভিযোগ ক্রেতাদের।

কথায় আছে- রথ দেখা হলো, কলা বেচাও হলো।  পূর্বাচলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা যেন হয়ে উঠেছে তাই।  কেনাকাটার পাশাপাশি একটু অবকাশ কাটাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে যাচ্ছেন নগরবাসী।  আর মেলার বিশাল প্রাঙ্গন শিশুদের জন্য হয়ে উঠছে আনন্দভুবন।

মেলায় হলরুমে প্রতিবছরের মত এবারও দর্শণার্থীদের জন্য রয়েছে বঙ্গবন্ধু কর্নার।  যার দেয়ালজুড়ে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নানা ঘটনার ছবি ও স্মৃতিচিহ্ন।

এবার মেলায় স্থান পেয়েছে ছোট-বড় মিলিয়ে ২২৭টি স্টল।  যেখানে ক্রেতা-দর্শনার্থীরা পছন্দের পণ্য কেনাকাটার পাশাপাশি স্বাদ নিতে পারছেন রকমারি খাবারের।  তবে খাবারের দাম নিয়ে অভিযোগ রয়েছে ক্রেতাদের।  

মেলা খোলা থাকছে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।  ছুটির দিনে খোলা থাকছে বাড়তি এক ঘণ্টা।

গত পয়লা জানয়ারি মেলা উদ্বোধন হলেও স্টলগুলো রেডি হতে সপ্তাহ সময় লেগে যায়। গতকাল মেলায় ছিল উপচেপড়া ভিড়। তবে বেশির ভাগ দর্শনার্থী মুখে মাস্ক পরে মেলায় এসেছিলেন। সকাল থেকেই বাড়তে থাকে দর্শনার্থীর সংখ্যা। ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যাই ছিল বেশি। মেলা নিয়ে আশাবাদী স্টল মালিকরা। মেলায় ঢুকলে স্থায়ী প্যাভিলিয়নে প্রথমে চোখ পড়বে বঙ্গবন্ধু গ্যালারিতে। এখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে গ্যালারিটি সাজানো হয়েছে। এখানে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীমূলক বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্ন দেখতে পাচ্ছেন। মেলার দর্শনার্থী সাহিবা সাহবুবা বলেন, বঙ্গবন্ধু গ্যালারির কারণে আমার বাচ্চারা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে সহজে জানতে পারছে। এ জন্য মেলা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। স্থায়ী প্যাভিলিয়নে বিভিন্ন স্টলের পাশাপাশি মেলার বাইরেও বিভিন্ন স্টল ও খাবারের দোকান রয়েছে। মেলার প্রতিটি স্টলে ক্রেতারা তাদের পছন্দমতো পণ্য নেড়েচেড়ে দেখেন। পছন্দ হলে কেনেন। আর ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিক্রেতারাও নানা কৌশল অবলম্বন করছেন। অনেকে মিষ্টি কথা আবার কেউ কেউ দিচ্ছেন মূল্যছাড়সহ নানারকম অফার। পণ্যের মধ্যে থাকছে ওয়ারেন্টিসহ বিক্রয়োত্তর নানা সেবার নিশ্চয়তা। স্বর্ণালংকারের স্টলগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন মডেলের তৈরি ঝুমকা, কানের দুল, ডায়মন্ড কাট, লকেট, চেইন, চুড়ি, ব্রেসলেট ও দৃষ্টিনন্দন ফিঙ্গার রিংসহ রংবেরঙের জিনিসপত্র সুন্দর করে ডিসপ্লেতে রাখা। অনেক ক্রেতা সেখানে ভিড় করছেন। সাধ্যের মধ্যে হলে অনেকে তা কিনছেন। ঢাকা থেকে আগত হুমায়রা আনজুম ইউষা বলেন, এখানে এসে অনেক ভালো লাগছে। কিন্তু দাম কিছুটা বেশি হওয়ায় এখনো কিনিনি। তবে বাজেটের মধ্যে পড়লে নেব। অনেক দর্শনার্থী ক্লান্ত হয়ে মাঝে-মধ্যে মেলার সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য স্থাপিত বিভিন্ন বেঞ্চে বসে বিশ্রাম নেন। অনেকে খাবারের দোকানে ভিড় করেন। এবারের মেলায় বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের অধীনে মেলায় ন্যায্যমূল্যে খাবারের বিশাল স্টল রয়েছে। এঁদের কেউ কেনাকাটা করেছেন আবার অনেকে করেননি। কারও হাতে একাধিক শপিং ব্যাগ আবার কারও হাত ফাঁকা। অনেকে আবার ছুটির দিন হওয়ায় বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। কেনাকাটা নয়, বিনোদনই তাদের লক্ষ্য। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার বিদেশি স্টলের পাশাপাশি দেশি কোম্পানির প্যাভিলিয়নের প্রতি আগ্রহ ছিল ক্রেতা-দর্শনার্থীদের। বিশাল পরিসরে এক জায়গায় নানা ধরনের পণ্য দেখার এবং কেনার সুযোগ পাচ্ছেন তারা। বিক্রেতারা বলছেন, দেশীয় পণ্যের পাশাপাশি বিদেশি পণ্যের ব্যাপারে বেশ আগ্রহ আছে ক্রেতাদের। ২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু হওয়ার প্রথম ছুটির দিন ছিল গতকাল শুক্রবার। এ জন্য সকাল থেকে ছিল দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়।

ঢাকার বাইরে মেলা হওয়ায় দর্শনার্থী কমের আশঙ্কা ছিল। তবে গত কয়েকদিন মেলায় উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। মেলায় দর্শনার্থীদের মাস্ক ছাড়া ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। যাদের মাস্ক নেই তাদের আমরা ফ্রি মাস্ক দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া মেলার ভিতরে স্বাস্থ্যবিধি পর্যবেক্ষণ করতে ৪০ জন আনসার ও ৩০ জন স্কাউড সদস্য সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছেন।

আরও পড়ুন