পানি নিচে পচে নষ্ট হচ্ছে জমির ফসল। চোখেমুখে দুশ্চিন্তা, কিভাবে শোধ করবেন দেনা, কিভাবেই বা চলবে সংসার।
এদিকে, মৌসুম শেষে আসছে নতুন মৌসুম। কিন্তু হাতে নেই ধান বোনার টাকা। টাঙ্গাইলের নিম্নাঞ্চলে অধিকাংশ রোপা আমন চাষির মনের খবর এটি। কিছুদিন পরই ধানের মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠতো কালিহাতির সল্লা এলাকার কৃষক তুলা মিয়ার উঠান। কিন্তু অসময়ের বন্যা কেড়ে নিয়েছে সব স্বপ্ন।
পানির নিচে পঁচে নষ্ট হচ্ছে তার একশ' শতাংশ জমির ধান। কিভাবে দেনা শোধ করবেন, কীভাবেই বা দিন চলবে, সেই চিন্তা তার চোখেমুখে।
কৃষক তুলা মিয়া বলেন, 'একটা ধানও পাবো না। এখনই ধান হাতায়া দেখলাম সব ধান পঁচে গেছে। একন আমি কিভাবে চলবো, কি খাবো সারাবছর। আর কিছু ঋণ আছে তা কিভাবে শোধ করবো।'
তার মতো বিপাকে জেলার ৭ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের অনেক রোপা আমন ও সবজি চাষি।
এলাকার অন্য কৃষকরা বলেন, 'এই ধান হওয়ার সম্ভাবনা আর নেই। যদি পানি নেমেও যায় নতুন করে ধান বোনার টাকাও নেই বা সময়ও আ পাওয়া যাবে না। আগামী পাচঁ বছরেও এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবো না।'
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল আমিন আব্বাসী বলেন, 'এই দুর্যোগে কৃষক যেন ঋণের চক্রে জড়াতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে। এসময় কৃষকদের আয়ের উৎসে প্রভাব ফেলে তা থেকে পরিবারের অন্নসংস্থান-বাস্তুসংস্থান বলেন বা বাসস্থান সেগুলোকে বাধাগ্রস্ত করে বলে মনেকরি।'
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোহাম্মদ আহ্সানুল বাশার বলেন, 'প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষকদের ঘুরে দাঁড়াতে সহযোগিতা করা হবে। আমরা এই অবস্থায় বড় ধরনের প্রণোদনার জন্য ইতিমধ্যে প্রপোজাল দিছি।'
টাঙ্গাইলে এবার ৯০ হাজার ৪শ' ৬৬ হেক্টর জমিতে রোপন করা হয়েছিলো রোপা আমন। বন্যায় ক্ষতি হয়েছে ৯শ' ৮০ হেক্টর জমির ধান।