বাংলাদেশ, জাতীয়, রাজধানী, কিডজ জোন

ডিজিটাল ডিভাইসের অধিক আসক্তিতে শিশু-কিশোররা

Md. Shakil Sarder

ডিবিসি নিউজ

সোমবার ১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:৪২:১৬ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

কিছুদিন আগেও শিশুদের হাতে প্রযুক্তিগত ডিভাইসগুলোর ব্যবহার নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে কোনো দু:শ্চিন্তা ছিল না। কিন্তু গত কয়েক বছরে শিশুদের মধ্যে এর নেতিবাচক প্রভাব ভাবিয়ে তুলেছে মা-বাবাদের।

দেশের ৪ থেকে ১৭ বছর বয়সী প্রায় ৬০ লাখ শিশু কিশোর ডিজিটাল ডিভাইসে আসক্তির কারণে নানা জটিলতায় ভুগছে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংস্থার গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি নানা রকম মানসিক সমস্যায়ও ভুগছে তারা। পর্যাপ্ত খোলা জায়গা এবং খেলার মাঠ না থাকায় রাজধানীতে ডিজিটাল ডিভাইসে আসক্তির এই সমস্যা বেশি। এই চিত্র রাজধানীর বেশির ভাগ শিশু-কিশোরদের মধ্যে দেখা যায়। দিনের বড় অংশই কাটে মোবাইল ফোনে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তথ্যমতে, বাংলাদেশের ৪ থেকে ১৭ বছর বয়সী প্রায় ৬০ লাখ শিশু কিশোর ডিজিটাল আসক্তিজনিত নানা রোগে ভুগছে।

সন্তানদের এই ডিজিটাল আসক্তিকে নিয়ে চিন্তিত অভিভাবকরাও। তাদের মতে, রাতে ঘুমের সময়, খাবার সময়, হাটাচলার সময় বাচ্চাদের মোবাইল লাগে। মোবাইল ছাড়া দিন চলে না তাদের। এতে ওদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে। মনের বিকাশটা ওরা এখন মোবাইলের সঙ্গে করে থাকে। বাবা-মার সঙ্গে একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে যাচ্ছে।

কোমলতি শিশু-কিশোরদের ডিজিটাল আসক্তির ভয়ংকর ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার জন্য অভিভাবকদের আরো সতর্ক হওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিজিটাল ডিভাইসে আসক্তি দূর না হলে শিশুরা অন্যান্য কার্যক্রম থেকেও দূরে থাকে। আর এসব কারণে বাচ্চাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বাঁধে। এক্ষেত্রে ডিজিটাল ডিভাইস এড়িয়ে চলতে হলে শিশুদের পড়াশোনা পাশাপাশি বিভিন্ন শারীরিক অনুশীলন এবং ইনডোর ও আউটডোর খেলায় মনযোগী করে তুলতে হবে।

সমাজবিজ্ঞানী নেহাল করিম বলেন, 'এই ডিজিটাল জগৎ নিয়ে পরে থাকলে বাচ্চাদের চোখের, ব্রেনের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। আমাদের নিজেদের এবং সন্তানদের মঙ্গলের জন্য তাদের বুঝাতে হবে। সন্তানের সঙ্গে ঘনিষ্টতা বাড়লে মা-বাবার জন্যই মঙ্গল।'

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘অতিমাত্রায় ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের ফলে শিশুর আইকিউ হয়তো সেভাবে নষ্ট হচ্ছে না, তবে তার মেধার বিশাল একটা বিশাল অংশ এই খাতে ব্যবহারের ফলে অন্যান্য স্থানে মেধার পূর্ণ প্রয়োগ হচ্ছে না। আর এক্ষেত্রে শিশুর বিকাশে প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে।’

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘যতটুকু সম্ভব বাচ্চাদের ডিজিটাল ডিভাইস থেকে দূরে রাখতে হবে। ডিজিটাল ডিভাইসের ওপরে আসক্তি বেড়ে গেলে তাদের শারীরিক অনুশীলন কমে যায়। সেক্ষেত্রে তারা মোটা হয়ে যায় এবং ওজনও বাড়তে থাকে। এতে বয়স হলে তাদের উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া তৈরি হতে পারে থাইরয়েডের সমস্যাও। একইসঙ্গে চোখ ও মস্তিষ্কের ওপরেও একধরণের চাপ সৃষ্টি হয়।’


 

আরও পড়ুন