অপরাধ, রাজধানী, বিশেষ প্রতিবেদন

ঢাকার কারখানায় তৈরি হয় বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের নকল প্রসাধনী সামগ্রী

আকরাম হোসেন

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ১৮ই সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৯:০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

চকবাজার থেকে রাসায়নিক নিয়ে কারখানায় তৈরি হয় বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের প্রসাধনী সামগ্রী। নকল এসব পণ্য ছড়িয়ে দেয়া হয় দেশজুড়ে।

পুরোনো ঢাকার চকবাজার থেকে রাসায়নিক সংগ্রহ। কারখানায় এনে মিশ্রণ তৈরি। তারপর কৌটায় ভরে লাগিয়ে দেয়া হয় বিশ্বের নামজাদা সব ব্র্যান্ডের প্রসাধনী পণ্যের লেবেল। এভাবেই তৈরি হচ্ছে বিশ্বখ্যাত নানা ব্র্যান্ডের প্রসাধনী সামগ্রী। গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে, চকবাজারের পাইকারি দোকান হয়ে এসব নকল পণ্য ছড়িয়ে পড়ছে দেশের সেলুন, পার্লার ও স্পা সেন্টারে।

নিজেকে সাজাতে, নিজেকে রাঙাতে কে না ভালোবাসে। তাই তো সেলুন, পার্লার কিংবা স্পা সেন্টারের সেবা নিচ্ছেন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে। কেউ চুলের যত্ন করাচ্ছেন, কেউবা ত্বকের। এতে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী পণ্য। কিন্তু এসব পণ্য কি আসল, গুণগত মানসম্পন্ন?

প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে রাজধানীর পুরান ঢাকায় নজরদারি শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশ। খোঁজ মেলে ভেজাল কারখানার। উদ্ধার হয়েছে বডি অউরা টোনার, সুদিং জেল স্কিন ট্রিটমেন্ট কোর্স, হেয়ার স্পা, লেজার ফেস প্যাক, রাইস বডি লোশন, ময়েশ্চার অ্যালোভেরা, ভিটামিন সমৃদ্ধ ক্রিমসহ আট ধরনের চল্লিশ কার্টন নকল ও ভেজাল পণ্য। এসব পণ্যের গায়ে ল'রিয়েলসহ বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের লেবেল সাঁটা। জব্দ করা হয়েছে মিশ্রণ ও মোড়কজাতের যন্ত্রও। এ নিয়ে মুখ খোলেন গ্রেপ্তার কারখানার মালিক।

নকল প্রসাধন পণ্যের তৈরিকারক সবুর ইসলাম বলেন, আমাদেরকে অর্ডার দেয়া হয় বানানোর জন্য পরে আমরা কেমিক্যাল কিনে বাসায় বসে সেগুলো বানিয়ে ডেলিভারি দিয়ে থাকি।

গোয়েন্দারা জানান, চকবাজারের পাইকারি বাজার হয়ে নকল প্রসাধনী পণ্য ছড়িয়ে পড়ছে সেলুন, পার্লার ও স্পা সেন্টারে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের উপ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক বলেন, এদের মূল ভোক্তা হচ্ছে ঢাকার সেলুনগুলো। উচ্চবিত্তরা যেসব সেলুনগুলোতে যায় সেখানেও যেসব প্রসাধনি ব্যবহার করা হচ্ছে তারা কিন্তু জানে না এগুলো আসল নাকি নকল। এই সুযোগটাই তারা গ্রহণ করে। 

নকল প্রসাধনীর ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ জানালেন সেলুন, পার্লার ও স্পা সেন্টারের ভোক্তারা।

সেবাগ্রহীতা সুমি রহমান বলেন, আমরা আসলে বুঝতে পারি না প্রসাধনিগুলো আসল নাকি নকল। ব্যবহারের পর যখন আমাদের ত্বকে সমস্যা দেখা দেয় তখনই আমরা বুঝতে পারি। কিন্তু ক্ষতি হওয়ার পর যদি বুঝতে পারি তাহলে তো আসলে কোন লাভ হয় না। তাই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যদি এ বিষয়ে আরও কঠোর হয় তাহলে আমাদের জন্য অনেক ভালো হয়।

পুরান ঢাকায় নকল প্রসাধন তৈরির কারখানা বন্ধ করতে অভিযান চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।

আরও পড়ুন