টানা ৮ বছর এক থানায় থাকার সুবাদে মাদক কারবারিদের সঙ্গে গড়ে তুলেছেন সুসম্পর্ক। মাদক কারবারিদের কাছ থেকে মাসোহারা পেতেন ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা।
এক থানাতেই টানা আট ৮ বছর। এ সুযোগে মাদক কারবারিদের সাথে সুসস্পর্ক তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার একজন সাব-ইনস্পেক্টরের। অভিযোগ, তাদের কাছ থেকে মাসোহারা পেতেন আট থেকে দশ লাখ টাকা। বিভিন্ন উৎসবে পেতেন দামি উপহার। প্রভাব খাটিয়ে তেজগাঁওয়ের কুনিপাড়ায় লিজ নেন তিন তলা বাড়ি। তেজগাঁও কেন্দ্রিক মাদক ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল পুলিশের এই উপ-পরিদর্শকের।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের দুই থানার অন্তত ১৫ থেকে ২০ পুলিশ সদস্য মাদক কারবারে সহায়তা করতেন, এমন সংবাদ ডিবিসি নিউজে প্রচারিত হওয়ার পর দুই থানার অভিযুক্ত ১৮ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার এসআই কামাল হোসেন মূলত মাদক কারবারিদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। তার কথায় এই থানার অন্য কয়েকজন পুলিশ সদস্য মাদক কারবারিদের সহায়তা করতেন। প্রতিমাসে তাদের কাছ থেকে কামালের আয় ছিল ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা।
রাজধানীর কুনিপাড়ার ৪২ টং এলাকায় কামালের আছে একটি তিনতলা টিনশেড বাড়ি। বাড়িটি লিজ নিয়ে তিনি ভাড়া দিয়েছেন। নিচতলায় গার্মেন্টস আর দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় ১৮টি কক্ষের ভাড়া বাবদ আয় মাসে লক্ষাধিক টাকা।
ডিবিসি নিউজের ক্যামেরা দেখে পাশের বাড়ির ম্যানেজার ফোন করেন এসআই কামালকে। আর কামালের বাড়ির ম্যানেজার দিতে থাকেন একেকবার একেক তথ্য। তবে ভাড়াটিয়ারা জানান বাড়ির মালিক কামালই।
অভিযোগ- বিভিন্ন উৎসবে মাদক কারবারিদের কাছ থেকে পেতেন দামি উপহার। রোজার ঈদের ২ দিন আগে এক মাদক কারবারি উপহার দেন মোটরবাইক।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে এএসআই হিসেবে যোগ দেন কামাল হোসেন। পদোন্নতি পেয়ে চার বছর পর হন এসআই। ৬ মাসের কোর্স শেষে আবারো একই থানায়। অর্থাৎ একই থানায় ৮ বছর।
আরেক অভিযুক্ত এসআই মোশারফ হোসেন চৌধুরী তেজগাঁও থানায় আছেন ৪ বছরের বেশি সময় ধরে। তার বিরুদ্ধেও বিস্তর অভিযোগ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশিদ বলছেন, 'বছরের পর বছর একই থানায় কাজ করার কারণে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছিলেন তারা।'