আন্তর্জাতিক, স্বাস্থ্য

দরিদ্র দেশে করোনার ওষুধ পৌঁছাতে ডব্লিউএইচও'র উদ্যোগ

ফারুক হোসাইন

ডিবিসি নিউজ

মঙ্গলবার ১৯শে অক্টোবর ২০২১ ০৫:১৬:৪৬ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

মাত্র ১০ ডলারে কেনা যাবে করোনার ওষুধ মলনুপিরাভিরের পূর্ণ ডোজ। সে উদ্দেশ্যে অ্যাকসেস টু কোভিড-১৯ টুলস এক্সিলারেটর বা এসিটি-এ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও। 

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিশ্বের দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রায় ১০০ কোটি মানুষকে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা এবং ১২ কোটি করোনা রোগীকে চিকিৎসাবাবদ অল্প দামে অ্যান্টিভাইরাল বড়ি সরবরাহের পরিকল্পনা নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও। 

মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, খসড়া পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, এসিটি-এ প্রকল্পের আওতায় দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর করোনা রোগীরা যেন প্রতি কোর্স অ্যান্টিভাইরাল বড়ি ১০ ডলারে কিনতে পারে সেই ব্যবস্থা করবে ডব্লিউএইচও। এ কাজে প্রয়োজনীয় অর্থের জন্য জি-২০ সহ অন্যান্য দাতা সংস্থার কাছ থেকে ২ হাজার ২৮০ কোটি ডলার চাওয়া হয়েছে।

দাতা দেশ ও সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে এসিটি-এ প্রকল্পে ১ হাজার ৮৫০ কোটি ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এটিসি-এর খসড়া পরিকল্পনায় কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের নাম উল্লেখ নেই। তবে বর্তমানে বাজারে করোনার অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ মলনুপিরাভির পাওয়া যাচ্ছে । প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন- অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ বলতে আপাতত মলনুপিরাভিরকেই বোঝানো হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে কয়েকটি অ্যান্টিভাইরাল করোনার পিল গঠনের প্রস্তুতি চলছে, তবে বর্তমানে সবচেয়ে এগিয়ে আছে মলনুপিরাভির। এই ওষুধটির চুড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল শেষ হওয়ার পথে। এটিসি-এর আওতায় আপাতত এই ওষুধটিই সরবরাহ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’

মলনুপিরাভির ওষুধটি প্রস্তুত করেছে মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি মার্ক। মলনুপিরাভির মানবদেহে করোনাভাইরাসের জেনেটিক কোডে সমস্যা সৃষ্টি করে ভাইরাসটির বংশবৃদ্ধি স্থবির করে দেয়। এর ফলে কমতে থাকে করোনা আক্রান্ত রোগীর  হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ও মারা যাওয়ার আশঙ্কা।

কর্মকর্তারা জানান, বাজারে বর্তমানে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য যেসব ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলোর মূল কাজ মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করা, ভাইরাসকে অকার্যকর করা নয়।

যুক্তরাষ্ট্রে ১০ লাখ ৭০ হাজার কোর্স মলনুপিরাভির সরবরাহ করতে ইতোমধ্যে দেশটির সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছে মার্ক। সেই চুক্তি অনুযায়ী, মার্কিন নাগরিকদের প্রতি কোর্স মলনুপিরাভিরের জন্য ব্যয় করতে হবে ৭০০ ডলার।

সেই হিসেবে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশসমূহ যদি ১০ ডলারে এক কোর্স মলনুপিরাভির কিনতে পারে, সেক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে তা চমকপ্রদ একটি ব্যাপার। কিন্তু কীভাবে তা সম্ভব?- তার উত্তরও দিয়েছেন ডব্লিউএইচওর ওই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘জেনেরিক ওষুধের (ভিন্ন নামে একই ওষুধ) মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সরবরাহ করা হবে মলনুপিরাভির।’

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, এ বিষয়ে মার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে ডব্লিউএইচও এবং কোম্পানি কর্তৃপক্ষ মলনুপিরাভিরের জেনেরিক ওষুধ প্রস্তুত করতে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে। ইতোমধ্যে আটটি ভারতীয় ওষুধ কোম্পানির সঙ্গে মলনুপিরাভিরের জেনেরিক ওষুধ প্রস্তুত করতে চুক্তিও করেছে মার্ক।

দরিদ্র দেশগুলোতে স্বল্পদামে করোনা টিকার ডোজ সরবরাহ করতে গত বছর কোভ্যাক্স ইনিশিয়েটিভস নামে একটি প্রকল্প শুরু করেছিল ডব্লিউএইচও। তবে কিছু উন্নত দেশে তাদের মোট চাহিদার চেয়েও অনেক বেশি করোনা টিকার ডোজ মজুত করে রাখায় কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পায়নি প্রকল্পটি।

আরও পড়ুন