অর্থনীতি, বিশেষ প্রতিবেদন

নানা সংকটে ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না বুড়িমারী স্থলবন্দর

শামীম আহমেদ

ডিবিসি নিউজ

বুধবার ২০শে অক্টোবর ২০২১ ১১:৪৩:৪৬ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

প্রতিবছর বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে প্রায় দুইশ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে সরকার। অথচ দীর্ঘ সময়েও তেমন কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি বন্দরের অবকাঠামোতে। নেই শ্রমিক-চালকদের বিশ্রামাগার, খাবারের স্থান, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা, আলাদা কাস্টমস ভবন বা পণ্য খালাসের জন্য শৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা। এমনকি ভোগান্তি রয়েছে যোগাযোগেও।

প্রতিদিন ভারত, ভুটান ও নেপালের পাঁচ থেকে ছয়শ' পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করে বুড়িমারী বন্দরে। যা খালাস করতে বন্দরে প্রবেশ করাতে হয় আরো ১৮শ' বাংলাদেশি ট্রাক। কিন্তু বাণিজ্যিক এই কর্মযজ্ঞে পদে পদে ভোগান্তি।

এক ট্রাক চালক বলেন, যে ৫ কিলোমিটার গাড়ি যায় সে রাস্তার পুরোটাই খারাপ। প্রতিদিন ২-৩টা গাড়ি পড়ে যায়।

এক ব্যবসায়ী বলেন, আমদানি ও রপ্তানিকারকরা ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সুষ্ঠু ম্যানেজমেন্টের অভাব আছে।

আরো এক ব্যবসায়ী বলেন, বাইরে থেকে লোকজন আসলে গোসল করা, বিশ্রাম নেয়ার জন্য কোন ব্যবস্থা নেই। এ ধরনের কোন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানও বন্দরে নেই।

বন্দরটিকে দ্বিতীয় শ্রেণীর কী পয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ঘোষণা করা হয়েছে। তবুও কাস্টমস ইয়ার্ডে বহিরাগতদের অবাধ বিচরণ। ঘটছে চুরির ঘটনাও। শৃঙ্খলা নেই শ্রমিকদের মাঝেও।

এক শ্রমিক বলেন, আমাদের বসার মত কোন জায়গা নাই, খাওয়ার মত কোন জায়গা নাই।

আরো এক শ্রমিক জানান, কাস্টমসের নিষেধ থাকলেও এই পরিস্কার মাঠেই আমরা বসে ভাত খাই। চারপাশে নানা আবর্জনার কারণে আমরা এদিকে আসি।

২০১৯-২০ অর্থবছরে আখাউড়ার পর ১১১ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে রেকর্ড গড়ে বুড়িমারী কাস্টমস। যা আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধির হার ৯৫.৮৯ শতাংশ। এর সাথে বন্দরের ভ্যাট ও রাজস্ব মিলিয়ে যুক্ত হয়েছে আরো ৭৮ কোটি টাকা। তারপরও বন্দরের নিরাপত্তা ও উন্নয়নে কোন উদ্যোগ নেই বলে দাবি ব্যবসায়ী নেতাদের।

বুড়িমারী স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত বলেন, 'যে সিকিউরিটি কর্মীদের দিয়ে বন্দরের নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে তাদের সংখ্যা পর্যাপ্ত না। এবং তারা সঠিক সময়ে বেতন পাচ্ছে না। আর সিকিউরিটির যোগসাজসেই ভেতরে চুরি হচ্ছে।'

তবে বরাবরের মত উন্নয়নে নানা পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে কাস্টমস। বুড়িমারী স্থলবন্দরের (কাস্টমস) সহকারী কমিশনার কেফায়েত উল্ল্যাহ মজুমদার জানান, 'স্থলবন্দরে আমাদের কাস্টমসের কোন অবকাঠামো ছিলো না। তবে আশার কথা হচ্ছে কাস্টমসের নিজের জায়গায় অবকাঠামো হবে বলে একনেকের সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। অচিরেই তার কাজ শুরু হবে।'

সড়ক যোগাযোগের উন্নয়ন ও বুড়িমারী-চেংড়াবান্ধা রেলপথ আবার চালু হলে উত্তরের অর্থনীতির চিত্র বদলে দেবে এই বন্দর, এমনটিই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুন