ধর্ম, রাজনীতি

নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে হেফাজতে ইসলাম

Kamrul Islam Rubel

ডিবিসি নিউজ

সোমবার ২১শে সেপ্টেম্বর ২০২০ ১২:১১:৩৩ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

'আহমদ শফীর উত্তরসূরী কে হবেন' এই প্রশ্নে হেফাজতে ইসলামের দ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠেছে।

হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে কে আসছেন এই প্রশ্নে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দু'পক্ষের। একপক্ষে সংগঠনটির মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী, অন্যপক্ষে আহমদ শফীর সন্তান আনাস মাদানী। আনাস মাদানীর অনুসারীদের দাবি, আহমদ শফীকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে হাটহাজারি মাদ্রাসার মহাপরিচালকের পদ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। বাবুনগরী ও তার অনুসারীরা এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, একমাসের মধ্যে কাউন্সিল ডেকে পরবর্তী নেতা নির্বাচন করা হবে।

প্রায় তিন মাস ধরে দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী কওমী মাদ্রাসা চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় অস্থিরতা চলছে। গেল জুলাই মাসে মাদ্রাসার সহকারী পরিচালকের পদ থেকে জুনায়েদ বাবুনগরীকে সরিয়ে দেয়া হয়, যিনি হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব। এরপর থেকেই হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক ও হেফাজত প্রধান আহমদ শফীর সন্তান আনাস মাদানীর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে বাবুনগরীর অনুসারীরা। তাদের মতে, আহমদ শফীকে ভুল বুঝিয়ে বাবুনগরীকে সরিয়েছেন আনাস মাদানী।

এই দ্বন্দ্বের জেরে বুধবার মাদ্রাসায় ব্যাপক ছাত্রবিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সেদিনই মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটিরি জরুরি সভা ডেকে আনাস মাদানীকে বহিষ্কার করা হয়। বৃহস্পতিবার আহমদ শফীকে ছাড়তে হয় মাদ্রাসার মহাপরিচালকের পদ। পরদিন,  শুক্রবার মারা যান তিনি।

আনাস মাদানীর অনুসারীরা বলছেন, মৃত্যুর আগের দু’দিন তার বাবা আহমদ শফীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে বাবুনগরীর অনুসারীরা। হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দিন রুহি দাবি করেন বাবুনগরী ও তার অনুসারীরা বিএনপি-জামাত জোটে থাকা ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে সাথে নিয়েছেন।

টেলিফোনে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুঈনুদ্দিন রুহী বলেন, হেফাজতের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা চিহ্নিত গোষ্ঠীর দালালরা আল্লামা আহমদ শফীকে মৃত্যুর কোলে ঠেলে দিয়েছেন এবং তার ছেলেকে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করেছেন। এ বহিষ্কার অবৈধ।' আল্লামা আহমদ শফীকে জিম্মি করে স্বাক্ষর নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন। এ সময় তিনি স্বাক্ষর করতে না চাইলে তার পিএসকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ করেন মাওলানা মুঈনুদ্দিন রুহী।

বাবুনগরী ও তার অনুসারীরা বলছেন, সরকার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের প্ররোচনায় হাটহাজারী মাদ্রাসায় বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছেন আনাস মাদানী। তাদের দাবি অসুস্থতার কারণেই স্বেচ্ছায় মহাপরিচালকের পদ ছেড়ে দিয়েছেন শফি।

হেফাজতে ইসলামের সহ-সভাপতি নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, 'এখানে ভুল বুঝানো হচ্ছে, জুনায়েদ বাবুনগরীর পদের কোনো লোভ লালসা নেই।'

এ বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এদিকে, এরইমধ্যে কাউন্সিল ডেকে হেফাজতে ইসলামের নেতা নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মহাসচিব বাবুনগরী ও তার অনুসারীরা। বিরোধীরা বলছেন, তথাকথিত কাউন্সিল ডেকে আহমদ শফীকে হেনস্তাকারীদের নেতৃত্বে আনার চেষ্টা চলছে।

মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া এই দ্বন্দ্বে সংগঠনটিতে বিভক্ত আসতে পারে বলে মনে করেন খোদ হেফাজতেরই নেতারা।

আরও পড়ুন