বাংলাদেশ, রাজনীতি

পরিবারকেন্দ্রিক রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে চায় আওয়ামী লীগ

ডিবিসি নিউজ ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

মঙ্গলবার ২১শে সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৯:২৩:১৩ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

পরিবারকেন্দ্রিক রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে চায় আওয়ামী লীগ। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিকদের পরিবার থেকে উত্তরাধিকারী তুলে আনার যে চর্চা চলছে তা ভেঙে মাঠের ত্যাগী ও নিবেদিত কর্মীদের স্বীকৃতি দেবার রীতি এরইমধ্যে শুরু হয়েছে। শুধু পরিবার থেকে আসলেই হবে না, দলের জন্য হতে হবে ত্যাগী ও নিবেদিত প্রাণ- এমন বার্তাই দেয়া হচ্ছে মনোনয়ন কৌশলের মাধ্যমে।

করোনার প্রায় দুই বছরে একাদশ জাতীয় সংসদ হারিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের বেশ কয়েকজন সদস্যকে। এসব আসনের উপ-নির্বাচনে সাধারণ প্রার্থীদের পাশাপাশি মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন, মৃত সংসদ সদস্যের পরিবারের সদস্যরাও।

তবে বেশিরভাগ মনোনয়নের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড বেছে নিয়েছে এলাকার ত্যাগী পোড় খাওয়া নেতাদের।

বাগেরহাট ৪ আসনের উপনির্বাচনে মোজাম্মেল হকের মৃত্যুতে মনোনয়ন পান, আমিরুল আলম মিলন। গাইবান্ধা ৩ এ ইউনুস আলী সরকারের মৃত্যুতে মনোনয়ন পান উম্মে কুলসুম স্মৃতি। যশোর ৬ এ ইসমত আরা সাদেকের মৃত্যুতে শাহিন চাকলাদার, ঢাকা ১৮ তে সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে মহানগর নেতা হাবিব হাসান, নওঁগা ৬ এ ইসরাফিল আলমের মৃত্যুতে আনোয়ার হোসেন হেলাল, ঢাকা ৫ এ হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যুতে মনিরুল ইসলাম মনু মনোনয়ন পেয়েছেন। পাবনা ৪ এ শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন তার পরিবারের ৮ সদস্য। কিন্তু মনোনয়ন পান স্থানীয় নেতা নুরুজ্জামান বিশ্বাস।

ঢাকা ১৪ আসনের এমপি আসলামুল হকের মৃত্যুর পর মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন তার স্ত্রী মাকসুদা হক। সেখানে মনোনয়ন পান মুক্তিযোদ্ধা আগা খান মিন্টু। সিলেট ৩ আসনে মাহমুদ উস সামাদের মৃত্যুতে স্ত্রী ফারজানা চৌধুরী মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও মনোনয়ন জোটে হাবিবুর রহমানের। কুমিল্লা ৫ এ আব্দুল মতিন খসরুর মৃত্যুর পর তার ভাই আবদুল মতিন ফেরদৌস মনোনয়ন চাইলেও মনোনয়ন দেয়া হয় আবুল হাসেম খানকে। সম্প্রতি কৃমিল্লা ৭ এ আলী আশরাফের মৃত্যুতে তার ছেলে মুনতাকীম আশরাফের বদলে চিকিৎসক প্রাণ গোপাল দত্তকে মনোনয়ন দেয়া হয়।

তবে সিরাজগঞ্জ ১ আসনে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের আসনে মনোনয়ন পান তার ছেলে তানভীর শাকিল জয়। আর বগুড়া ১ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য আবদুল মান্নানের স্ত্রী সাহাদারা মান্নানকে মনোনয়ন দেয়া হয়।

আওয়ামী লীগ সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন,'পার্লামেন্টের যারা সদস্য হবেন তাদেরকে অবশ্যই আইন প্রণয়ন থেকে শুরু করে সেই বিষয়ে যোগ্যতা থাকতে হবে। রাজনীতিতে নানা বাধা-বিপত্তি, আন্দোলন-সংগ্রাম আমরা তো বলি পুঁড়িয়ে, পুঁড়িয়ে একজন রাজনৈতিক কর্মীর স্বচ্ছতা আসে। তাদের যোগ্যতা নির্ধারিত হয়। দলের যে এমপি ছিলেন তার সন্তান বা তার স্ত্রী রাজনীতি করুক, দলের সাথে আরও জড়িয়ে থাক। এক সময় তারা হয়তো যোগ্যতা অর্জন করলে পাবে।'

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, উত্তরাধিকারী হলেই চলবে না, যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তার মাপকাঠির পরীক্ষায়ও পাশ করতে হবে। আওয়ামী লীগ স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন,'মাঠ পর্যায় থেকে দীর্ঘ দিনের রাজনীতির মাঠে যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে তারাই মনোনয়ন পাবার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত হবে। যদি কোন মন্ত্রী বা এমপির কন্যা বা পুত্র রাজীতিতে স্বক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে যদি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা তৈরী করতে পারে তবে তারা পেতে পারে।'

তারা আরো বলেন, পরিবারকেন্দ্রিকতা থেকে বের হয়ে এসে তৃণমুলকে উৎসাহিত করতে দলের ত্যাগী নেতাদের বেছে নেয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন