করোনা মহামারির মধ্যে এবারও অন্য দেশের নাগরিকদের হজে অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও, শুরু হয়ে গেছে প্রতারণা। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার সুযোগ নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফাঁদ পেতেছে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। কখনো মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, কখনোবা সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয়ে হজে যেতে ইচ্ছুকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা।
মহামারির মধ্যে গেল বছর হজে অংশ নিতে পারেননি সৌদি আরব বাদে অন্য কোন দেশের মুসলিমরা। এবারও রয়েছে একই শঙ্কা। তারপরও হজকে কেন্দ্র করে সক্রিয় সংঘবদ্ধ প্রতারকরা।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে আগ্রহীদের ফোন করে কখনো মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, কখনো সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয় দেয় প্রতারকরা। এরপর হজ পালনে সরকারি তালিকায় নাম থাকার কথা বলে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে হাতিয়ে নেয় হাজার হাজার টাকা। বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং পয়েন্ট থেকে তুলে নেয় সেই টাকা।
সম্প্রতি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কল সেন্টারে ফোন করে এরকম প্রতারণার অভিযোগ করেন অনেকে। পরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে মন্ত্রণালয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইয়াকুব আলী জুলমাতি বলেন, 'সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে পাঠানোর কথা বলে সাড়ে ৭ হাজার টাকা করে চাচ্ছে যে, নিবন্ধন ফি বাবদ টাকাটা লাগবে। এ টাকা না দিলে তার নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। গত ৪ তারিখে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের উল্লেখ করে যে মোবাইল নাম্বারগুলো ব্যবহার করেছে সেগুলো উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। সেই মামলার বাদী আমি।'
এরপর খুলনা থেকে প্রতারক চক্রের প্রধান নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, 'বিশেষ করে ইমাম সাহেব ও অন্যান্য জায়গায় যারা ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আছেন তাদেরকে ফোন করে বলে, আপনি সরকারিভাবে হজের জন্য নিবন্ধিত হয়েছেন। বিকাশ নাম্বার দেই, সাড়ে ৭ হাজার টাকা সেখানে পাঠাবেন এবং তাহলে নিবন্ধন কাজটি দ্রুত হবে। নোয়াখালীর এক এমপির এপিএস পরিচয় দিয়েও কাজটি হয়েছে। সামনে হজ মৌসুম এরকম প্রতারণা হয়তো আরো হতে পারে। কনফার্ম না হয়ে যে কোন ব্যক্তি ফোন করে টাকা চাইলেই আপনারা যে না দেন সেটা অনুরোধ রইলো।
এই চক্রের বাকি সদস্যদের ধরতেও অভিযান চলছে।