নেপালের জনগণ তো দূরের কথা, দেশটির ট্যুর অপারেটররাই জানেন না বাংলাদেশে আছে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত।
পরিকল্পনা আর প্রচার প্রচারণার অভাবে, প্রতিবেশিদের কাছেও অজানা থেকে যাচ্ছে বাংলাদেশের বহু দর্শনীয় স্থান ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র। ট্যু'র অপারেটররা বলছেন, যথাযথ পদক্ষেপ নিলে এ খাত থেকেও আসতে পারে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা।
অবিচ্ছিন্ন ১২২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের কক্সবাজারে। প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের অবস্থানও এই ব দ্বীপেই। বাংলাদেশের বুক চীরে যত নদ নদী, সবগুলোর গন্তব্য ঐ সমুদ্রেই।
যে পাহাড় গড়িয়ে আসে এমন অথৈ জল, সেই পাহাড়ের দেশ নেপালের মানুষরাই জানেন না কেবল পাশের দেশটিতেই আছে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। শুধু তাই নয় প্রচার প্রচারনার অভাবে বাংলাদেশের নদ নদী, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র আর চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহ তাদের কাছে অজানা।
গোয়িং নেপাল প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারপার্সন লিলা ধর ভান্ডারি বলেন, নেপালিরা সাধারণ সমুদ্র দেখতে ব্যাংকক কিংবা গোয়া যায়। পাশের বাংলাদেশেই যে সমুদ্র আছে আমরা তা জানি না। এমনি সেটা নাকি পৃথিবীর দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত সে তথ্যও আমাদের কাছে নেই।
নেপাল ট্যুরিজম বোর্ডের অনারারি পাবলিক রিলেশন রিপ্রেজেন্টেটিভ ফর বাংলাদেশ তাসলিম আমিন শোভন বলেন, এ ব্যর্থতা আমাদের এবং পর্যটন মন্ত্রণালয়ের। আমাদের প্রতিবেশি দেশ হিসেবে নেপালকে যদি আমরা আরও আগে চিন্তা করতাম তাহলে সেদেশ থেকে অনেক পর্যটক আমাদের দেশে আনা সম্ভব হতো।
করোনা পরবর্তী সময়ে টিকে থাকার স্বার্থেই অন্যান্য দেশ যখন পর্যটন টানতে গুরুত্ব দিচ্ছে প্রতিবেশি দেশগুলোতে, তখন বাংলাদেশ আটকে আছে মাস্টার প্ল্যানের আশায়।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের রিসার্স অ্যান্ড প্ল্যানিং ডেপুটি ডিরেক্টর মোহাম্মদ সাইফুল হাসান বলেন, আমাদের মাস্টার প্ল্যানটি মূলত ২৫ বছর মেয়াদি হবে। আমরা এটি বাস্তবায়নে কাজ করছি। এই প্ল্যানের মাধ্যমে একটা সিস্টেমেটিক ভাবে ট্যুরিজমকে উন্নত করার চেষ্টা করবো।
ট্যুর অপারেটররা বলছেন, মাস্টার প্ল্যান একটি দীর্ঘ মেয়াদি বিষয়। এই মুর্হুতের সম্ভবনা কাজে লাগাতে সরকারের উচিত ব্যতিক্রমী কিছু চিন্তা করা।
ট্যুরিস্ট গাইড অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ মাহবুবুল ইসলাম বুলু বলেন, নেপাল ছয় মাস আগে থেকেই বলা শুরু করেছে কবে থেকে তারা এয়ারপোর্ট খুলবে। করোনার কারণে যে ট্রাভেল ব্যান হয়েছে সেগুলো এখনো আমরা উঠিয়ে নেইনি। এটাও এ সমস্যার একটা বড় কারণ।
করোনা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়া সহ, বিদেশি পর্যটকদের জন্য অনএরাইভাল ভিসাসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে পর্যটনখাত থেকেই আসতে পারে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা, সৃষ্টি হতে প্রচুর কর্মসংস্থানও।