জাতীয়, অপরাধ

প্রতারণাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন রিজেন্টের চেয়ারম্যান সাহেদ

আকরাম হোসেন

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ১১ই জুলাই ২০২০ ০৮:২০:৫৫ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

একাধিক ব্যাংকে আছে সাহেদের নামে অ্যাকাউন্ট, একেক হিসাবের জন্য সইও একেক রকম।

একটি বা দুটি নয় দেশের একাধিক ব্যাংকে আছে সাহেদের ব্যাংক হিসাব। একেক হিসাবের জন্য সাক্ষরও ছিল একেক রকম। কে- কোন ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করবেন তার জন্য লোকও ছিল আলাদা। পাওনাদার নয় কথামতো কাজ না করলে সহকর্মীদের বেধড়ক পেটানোর নজীরও আছে তার। রিজেন্ট গ্রুপের সাবেক এক কর্মীর সঙ্গে টেলিফোন আলাপে উঠে এসেছে অজানা এসব তথ্য।

এমএলএম- হাসপাতালসহ নানান ব্যবসা। সব জায়গাতেই সাহেদের ছিল প্রতারণার ফাঁদ। ভয়ে থাকলেও এখন মুখ খুলছেন অনেকেই। তাদের একজন- সাহেদের সঙ্গে কাজ করতেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে টেলিফোনে জানান সাহেদকে নিয়ে নানান তথ্য। 

জানান সাহেদ তার ব্যাংক হিসাব কিভাবে নিয়ন্ত্রন করতো।

সাহেদের সাবেক কর্মী জানান, সব জায়গায় তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছিলো। স্যারের একেক সই একেকরকম ছিলো। কখনোই একরকম সই দিতো না। অন্যকাউকে টাকা উঠাতে দিলেই আটকে যেত। আমি ব্যাংক এশিয়াতে গেছি, ডাচ বাংলা ব্যাংকে গেছি। অনেককে দিয়েই কাজ করাতো।

অফিসে ডেকে এনে  মানুষ পেটানো ছিল সাহেদের প্রায় দিনেরই কাজ।

তিনি জানান, 'স্যারের রুমে ইজারাদারকে নিয়ে মারতেছে। কেন, কি কারণে এটা বলতো না। এগুলো হচ্ছে, অফিসে ঢুকতেছি তখন কানাকানি ধুমধাম শব্দ শুনতেছি, তখন হালকা জানতে পারতাম। বিস্তারিত জানতে পারতাম না। পরে শুনলাম জানলাম সে দুই নাম্বার লোক, এরপর আমি চলে আসলাম।'

অন্যদের সামনে নিজেকে জাহির করার জন্য ছিল আলাদা কৌশল।

সেই কর্মী জানান, 'আমি কি একটা কাজে ভেতরে গেছি সেখানে গিয়ে দেখি মাল্টিপারপাসের ম্যানেজার সহ কয়েকজন বসে আছে। আর সাহেদ স্যার লাইভ প্রোগ্রাম করতেসে। প্রশ্ন করতেসে সব নিজেদের লোক। তখনই বুঝলাম লাইভ প্রোগ্রাম তাহলে এই। সাংবাদিক বানায় ওখানে প্রশ্ন করতাসে।'

সাহেদের ব্যক্তিগত জীবনও ছিল রহস্যে ঘেরা।

তিনি জানান, 'ওরে আল্লাহ্ আমার জানামতে তো আমি তিনটা বউ দেখি। ঐ যে প্রিয়তির আম্মু, যে বনানীতে থাকে। নাজিয়ার আম্মুকেও তো কিছুদিন আগে কক্সবাজার থেকে আটক করছে। আরেকজনের নাম চৈতি, ঐ টাই জানতাম তার অরজিনাল বউ। তার যে আর কোনো বউ আছে তা জানতাম না। পরে মার্জিয়াকে বেতন দিতে হইতো। এই মার্জিয়ার নামে প্রতিমাসে ৪০ হাজার টাকা বেতন দিতে হতো। স্যার তাকে বিয়ে করছে, কিন্তু চৈতির আম্মুর সামনে সেটা দেখাচ্ছে না। লিজা ম্যাডামও মনে হয় তার বিবাহিত ছিল। অনেক খবরদারি করতো। মার্জিয়াকে নিয়ে একবার অনেক ঝগড়া হয়েছিল, কেন মার্জিয়াকে টাকা দিত।'

আরও পড়ুন