বাংলাদেশ, অপরাধ

বহুতল ভবন ছাড়া চুরি করে না সংঘবদ্ধ চোর চক্র!

আকরাম হোসেন

ডিবিসি নিউজ

মঙ্গলবার ২১শে সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৪:০৪:০৬ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

দশ সেকেন্ডেই যে কোন ডিজিটাল লক খুলতে পারদর্শী চোর চক্রটি। সিসিক্যামের ফুটেজ সংরক্ষণের যন্ত্রও নিয়ে যায় চোর চক্র।

টার্গেট বহুতল ভবনের কর্পোরেট অফিস। গ্রাহক সেজে সাত দিন পর্যবেক্ষণ। নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য অন্যের নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার। তারপর হেক্সো ব্লেড, রেঞ্জ আর স্ক্রু ড্রাইভার নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে মিশনে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বড় বড় শহরে শতাধিক চুরিতে জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।

বড় বড় শহরে দিনে দিনে বাড়ছে বহুতল ভবন। সুউচ্চ দালান হয়ে উঠছে ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল।

এই সুযোগে বহুতল ভবনে কর্পোরেট অফিসকে কেন্দ্র করে সক্রিয় দুর্ধর্ষ চোর চক্র। সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরায় প্যারাডাইস টাওয়ারের সিসিক্যামের ফুটেজে দেখা গেছে, ভবনটির মূল ফটক দিয়ে ঢুকে লিফটে উঠছে দু'জন। অষ্টম তলায় নেমে সিঁড়ি বেয়ে নবম তলায় উঠে যায় তারা। এর দুই ঘণ্টা বিশ মিনিট পর একাধিক প্রতিষ্ঠানে চুরি শেষে নিজেদের জামা-কাপড় পরিষ্কার করছে তিনজন। তারপর অষ্টম তলায় নেমে লিফট ব্যবহার করে নীচে চলে যায় তারা। চুরির ঘটনায় মামলা করে একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান।

ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কর্মকর্তারা জানান, বহুতল ভবনের কর্পোরেট অফিস টার্গেট করার পর কুমিল্লা থেকে দু'জন সিম-বিক্রেতার কাছ থেকে অন্যের নামে নিবন্ধিত সিম যোগাড় করে চোরচক্র। তারপর সেগুলো ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখে। এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণের পর হেক্সো ব্লেড, রেঞ্জ আর স্ক্রুড্রাইভার নিয়ে হানা দেয় টার্গেট অফিসে। দশ সেকেন্ডেই খুলে ফেলে যেকোন ডিজিটাল লক। চুরি শুরুর আগে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে সিসিক্যামের ফুটেজ সংরক্ষণের যন্ত্রটিও নিয়ে নেয় তারা।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (উত্তরা) অতিরিক্ত উপ কমিশনার বদরুজ্জামান জিল্লু বলেন, গ্রেফতারকৃতরা ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় সুউচ্চ টাওয়ারে অবস্থিত বিভিন্ন নামিদামি অফিসে চুরি করার জন্য টার্গেট করে। সেবা গ্রহীতার বেশে এই চোর চক্রের সদস্যরা প্রথমে টার্গেটকৃত অফিসকে ২/৩ দিন ব্যাপী রেকি করার মাধ্যমে চুরির কৌশল রপ্ত করে। টার্গেটকৃত এ সকল অফিসের তালা, সিকিউরিটি লক, ডিজিটাল লক ও অফিস কক্ষের ড্রয়ার ভেঙ্গে মূল্যবান মালামাল ও টাকা পয়সা চুরি করে সুকৌশলে বের হয়ে চলে যায়।

ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বড় বড় শহরে কয়েকশো চুরির সঙ্গে জড়িত চক্রটির সেকেন্ড ইন কমান্ড জামালের নামে রয়েছে বিশটির বেশি মামলা। এরমধ্যে একটিতে দশ বছরের সাজাপ্রাপ্ত সে। বহুতল ভবনে চুরি নিয়ন্ত্রণে চক্রের মূলহোতা নাসিরকে ধরতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে গোয়েন্দা পুলিশ।

আরও পড়ুন