ব্যয়ের চাপ বেড়ে যাওয়ায় আসছে বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা আরও বাড়ানোর দাবি নীচের স্তরের করদাতাদের। তবে অর্থনীতি বিশ্লেষকরা মনে করেন, আয়করের সীমা বাড়ানোর চেয়েও জনগণের টাকার স্বচ্ছ ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি এই মুহূর্তে।
দেশে এখন নিবন্ধিত আয়কর দাতার সংখ্যা ৭৫ লাখেরও বেশি। চলতি অর্থবছরে যার মধ্যে আয়কর রিটার্ন দিয়েছেন মাত্র ২৬ লাখ। যাদের একটি বড় অংশই চাকরীজীবী হওয়ায় বেতনের উৎস থেকেই কেটে নেয়া হয় আয়কর।
বাংলাদেশ ভেঞ্জার ক্যাপিটাল লিমিটেডের বিজনেস এনালিস্ট মাহফুজুর রহমান বলেন, 'যদি আমার মাসের খরচ হয় ৩০ হাজার টাকা, সেখানে যদি সেই খরচ বেড়ে যায় ৫০ হাজার টাকায়। কিন্তু আমার বেতন ৫০ হাজার টাকা। তখন আমি আসলে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না এবং পাশাপাশি আমার জন্য কষ্টকর হয়ে যাবে।'
বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদন বলছে, এক বছরে বিশ্ব বাজারে নিত্যপ্রয়োজনী প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। যার কষাঘাতে পিষ্ট সীমিত আয়ের মানুষ। তাই সাধারণের দাবি করের বোঝা কমানোর।
প্রিন্ট এ গ্রাফি ডট কম প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাহমুদ বলেন, 'অবশ্যই এই ছোট পরিমানের অর্থ হলে মানসিকভাবে একটা চাপ সৃষ্টি করে। সরকারের কাছে অনুরোধ করব যে, এটা যদি সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকার উপরে নিম্নস্তরটি নির্ধারণ করতে পারে তাহলে বরা যায় অন্তত আমরা সীমিত আয়ের মানুষেরা মুক্তি পাব।'
বিশ্লেষকরাও বলছেন, নিম্ন স্তরের আয়কর সীমা কমানোর পাশাপাশি অর্থমন্ত্রীর উচিত করের টাকা ব্যবহারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, 'যেখানে প্রচুর একটা বৈষম্য বিদ্যমান, প্রান্তিক লোকের কাছে টাকা নাই, কর দেয়ার মতো টাকা নাই, আয় নাই ইত্যাদি। তাকে নিয়ন্ত্রণ করার যে খরচ, তার চেয়ে যারা প্রচুর টাকার মালিক, তাদের পিছনে বরং ক্যালরি খরচ করা উচিৎ।'
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, 'একজন নাগরিককে কেন কর দিতে হবে। এই কর দেয়ার বিনিময়ে তিনি এবং দেশবাসী কি পাবে। এটা আমরা বুঝাতে পারি না। পৃথিবীতে এক কিলোমিটার রাস্তা বানাইতে ৩০ কোটি টাকা লাগে। আমাদের দেশে আপনারা চোরদের হাতে ৯০ কোটি টাকা তুলে দেন।'
আসছে অর্থবছরে সাম্ভাব্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার বড় বাজেট দিচ্ছে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। যেখানে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য হতে পারে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা।
করোনা ও যুদ্ধের প্রভাবে চাপে থাকা অর্থনীতি চাঙ্গা করতে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন অর্থমন্ত্রী।নতুন বাজেট কতটাইবা সাধারণ মানুষ বান্ধব হবে তা জানতে অপেক্ষায় থাকবে ৯ জুন পর্যন্ত।