ঢাকা থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের আসার খবর পেয়ে 'ইচ্ছা করে' শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটের সব ফেরি বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বরিশাল মহানগর বিএনপির সমাবেশে অংশ নিতে যাওয়া নেতাকর্মীরা ফেরি বন্ধ পেয়ে এসব অভিযোগ করেছেন। ফেরি বন্ধ করে দেওয়ার বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরাও। ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, ফেরিতে কারিগরি সমস্যার কারণে সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ ছিলো ফেরি পারাপার। বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শিমুলিয়া ঘাটে এ ঘটনা ঘটেছে।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন অভিযোগ করে বলেন, মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট অংশে কোন ফেরি রাখা হয়নি। ইচ্ছা করে সব ফেরি মাদারিপুরের বাংলাবাজার ঘাটে রেখে দিয়েছে। শিমুলিয়া ঘাটের সব অফিসগুলো তালা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় যাতে আমাদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে না হয়। এরপর আমাদের বহরে থাকা ২৫টির মতো গাড়ি এসব আটকা পড়ে যায়। এসব গাড়ি শিমুলিয়া ঘাটের আশেপাশে অবস্থান করছে। বাধ্য হয়ে ট্রলার ও লঞ্চের মাধ্যমে পদ্মা পাড়ি দিতে হয়েছে। সরকারের এমন কর্মকাণ্ড কখনো সুস্থ রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ হতে পারেনা। নানা বাধার পরও আমাদের উদ্দেশ্য সফল করা হবে বলে জানান তিনি।
বহরে থাকা সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক রিয়াদ মোল্লা জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শিমুলিয়া ঘাটে আসার পর আমাদের গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। তারপর দেখি কোন ফেরি নেই ঘাটে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার কোন উপায় ছিলো না। কেন না সব ফেরি কর্তৃপক্ষের অফিসগুলো বন্ধ ছিলো। ঘাটের কেউ সহযোগিতা করছিলো না। প্রথমে আমাদের লঞ্চ, ট্রলারে করেও যেতে বাধা দেওয়া হয়েছিলো। এরপর জোরপূর্বক লঞ্চঘাটে গিয়ে লঞ্চে যাই। প্রায় এক ঘণ্টা ঘাটে আমাদের বাধা দিয়ে রাখা হয়েছিলো।
শিমুলিয়া ঘাটের যাত্রীরা জানান, সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ফেরিঘাটগুলোতে কোন ফেরি দেখা যায়নি। এতে করে পদ্মাপাড়ের জন্য আসা গাড়ির লাইন দীর্ঘ হতে থাকে। ঘাটে পুলিশ, ফেরি কর্তৃপক্ষের কাউকে পাওয়া যাচ্ছিলো না। ফেরি বন্ধ থাকায় চাপ পড়ে লঞ্চঘাট ও স্পিডবোট ঘাটে। এরপর সকাল সাড়ে ১০ টার পর থেকে ফেরির দেখা মিলে। বিএনপির একটি গাড়ির বহর ঘাটে অবস্থান করছিলো। ঘাটের চারদিকে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে তাদের উপস্থিতি দেখে ফেরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিমুলিয়া ঘাটের বিআইডব্লিউটিসি'র একজন কর্মকর্তা জানান, আমাদের কাছে রাতে মোবাইলে একটি নির্দেশনা আসে যে সব ফেরি শিমুলিয়া থেকে সরিয়ে মাদারিপুরের বাংলাবাজার ঘাটে সরিয়ে নেওয়ার। কি কারণে বা কেন এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেনি। তবে বিএনপির গাড়ির বহর আসার প্রায় এক ঘণ্টা আগে জানানো হয়।
বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে বিআইডব্লিউটিএর শিমুলিয়াঘাটের সহকারি পরিচালক শাহাদাত হোসেন জানান, সকাল থেকে ফেরি বন্ধের কারণে লঞ্চঘাটে একটি বাড়তি চাপ লক্ষ্য করা গেছে। তবে কিছুক্ষণ আগে আস্তে আস্তে কয়েকটি ফেরি চলছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের আলাদা করে দেখার কোন বিষয় এখানে নেই। সব যাত্রীদেরকে পার করা হচ্ছে।
মাওয়া ট্রাফিক পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন জানান, দুপুর ১টার দিকে ঘাট এলাকায় ৭০০ গাড়ি পারের অপেক্ষায় আছে। সকাল থেকে ফেরি কম চলাচল করেছে বলে জানান তিনি।
বিআইডব্লিউটিসি'র শিমুলিয়া ঘাটের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ফেরি কারিগরি সমস্যা দেখা দেয়। যার জন্য সাময়িক সময়ের জন্য ফেরি বন্ধ ছিলো। তবে এখন ১৪টি ফেরি চলাচল করছে বলে জানান তিনি।
জানা যায়, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে ছয় সিটিতে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি মনোনিত মেয়র প্রার্থীরা। আজ প্রথম সমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বরিশালে।