জাতীয়, অর্থনীতি, জেলার সংবাদ

বিনা পয়সাতেও মিলছে চামড়া!

শামীম আহমেদ

ডিবিসি নিউজ

রবিবার ২রা আগস্ট ২০২০ ০২:০২:৫৯ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে এবারও সারা দেশে লোকসানের মুখে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে পাওনা টাকা না পাওয়ায় এ বছর চামড়া কিনতে পারেননি অনেক চামড়া ব্যবসায়ী।

ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনে রবিবার (২ আগস্ট) কাঁচা চামড়ার দাম আরও পড়ে গেছে রাজধানীর পোস্তায়। কোনো উপায় না দেখে লোকসানে বা কেনা দামেই চামড়া বিক্রি করে দিচ্ছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, ঈদের প্রথম দিন থেকেই দাম কম ছিলো। ফলে বেশি দামের আশায় অপেক্ষা করেছেন তারা। কিন্তু বৃষ্টি আর গরমে চামড়ায় হেয়ার স্লিপ শুরু হয়। যে কারণে দ্বিতীয় দিন দাম আরো কমেছে।

রাজধানীর আড়ৎদারদের দাবি, প্রথম দিন সরকারের বেঁধে দেযা দামের চেয়ে বেশি দরে চামড়া কিনেছেন তারা। কিন্তু রবিবার চামড়ায় পচন ধরায় দামও কমেছে। আড়ৎদারদের অনেকেই চামড়া কেনা বন্ধ করে দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে ক্রেতা সংকটে ভুগছেন ঢাকার বাইরের চামড়া ব্যবসায়ীরা।

এদিকে, গত বছরের মতো এবারও ধস নেমেছে উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার বাজার দিনাজপুরের রামনগর বাজারে। সরকার নির্ধারিত দরে চামড়া কিনলেও বিক্রি করতে গিয়ে অর্ধেক দামও পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।

তবে, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার আড়ৎ নাটোরের চকবৈদ্যনাথে চামড়ার দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে মৌসুমি ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের মধ্যে। কেউ কেউ চামড়ার দাম নিয়ে সন্তুষ্ট হলেও, কারও কারও রয়েছে ন্যায্য দাম না পাওয়ার অভিযোগ।

অন্যদিকে, বেশি দামে চামড়া কিনে কম দামে বিক্রি করে পুঁজি হারিয়েছেন রাজশাহীর মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। পানির দরে বিক্রি হচ্ছে ছাগলের চামড়া মাত্র ১০ টাকায়। আর গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায়। অনেক চামড়া বিক্রেতা ১০ টাকায় ছাগলের চামড়া বিক্রি করে রিকশা ভাড়াই দিয়েছেন এর চেয়ে বেশি।

আর, ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে কয়েক বছরের পাওনা টাকা না পাওয়ায় এ বছর চামড়া কিনতে পারেননি খুলনার অনেক ব্যবসায়ী। যার কারণে চামড়ার একটি বড় অংশ বিক্রি না হওয়ার আশংকা থেকে যাচ্ছে। প্রতি বছর খুলনা নগরী ও জেলায় কোরবানির ৪০ থেকে ৫০ হাজার পশুর চামড়া বিক্রি হয়ে থাকে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের হিসেব অনুযায়ী এ বছর তারা চামড়া ক্রয় করেছেন ৮ থেকে ১০ হাজার পিস।

এছাড়া, সিলেটে এ বছর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। সেখানে এ পর্যন্ত চামড়া সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২০ হাজার। ট্যানারি মালিকরা উপযুক্ত টাকা না দেয়ায় ব্যবসায়ীদেরও হাতেও টাকা নেই। ফলে চামড়া কেনার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ কম দেখা গেছে।

তাছাড়া, এবারও বগুড়া ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে মিলছে না চামড়ার ন্যায্য দাম। ট্যানারি মালিকরা পাওনা টাকা না দেয়ায় বাজারের এমন পরিস্থিতি বলে মনে করেন চামড়া ব্যবসায়ীদের। ঈদের দিন গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দরে এবং ছাগলের চামড়া বিক্রয় হয়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা ধরে। তবে অনেক জায়গায় চামড়া বিক্রি না হওয়ায় ও মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় গ্রামাঞ্চলে অনেকেই বিনামূল্যে দিয়ে দিয়েছেন চামড়া ব্যবসায়ীদের, কেউবা আবার চামড়া ফেলে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন