আগামী বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যের আগাম নির্বাচন। যার মাধ্যমে পার্লামেন্টের নেতা নির্বাচন করবেন ব্রিটিশরা। সে দেশের জনগণ ঠিক কি ধরনের সংসদীয় ধারা অনুসরন করে তাদের নেতা নির্বাচন করেন। এ সম্পর্কে বিশদ জানাচ্ছেন রঞ্জন শুভ্র ।
ত্রয়োদশ শতকে ইংল্যান্ডে সংসদীয় ব্যবস্থা গড়ে ওঠার মধ্য দিয়ে আধুনিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ার শুরু। বৃটেনের পার্লামেন্টের আপার হাউস বা উচ্চকক্ষকে বলা হয় হাউস অফ লর্ডস। (আর)লোয়ার হাউস বা নিম্নকক্ষ যাকে বলা হয় হাউস অফ কমন্স। হাউস অব কমন্সের সদস্যরা নির্বাচিত হন সাধারণ ভোটারদের ভোটে। তবে, উচ্চকক্ষের সদস্যরা নির্বাচিত হন বংশগত যোগ্যতায় অথবা সরকারের মনোনয়নে। তাদের কোন প্রস্তাব পাসের আগে পুনর্বিবেচনার জন্য নিম্নকক্ষে পাঠানো ছাড়া তেমন কোন ক্ষমতা থাকে না।
গোটা ব্রিটেনকে মোট ৬৫০ টি নির্বাচনী এলাকায় ভাগ করে অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচন। এলাকাগুলো ছোট বড় যাই হোক, সেগুলোর প্রতিটিতে ৬০ হাজার থেকে ৮০ হাজার ভোটার রয়েছে। অন্যদিকে, প্রার্থী হতে হলে, তার বয়স ১৮ বছরের বেশি এবং ব্রিটিশ, আইরিশ কিংবা কমনওয়েলথভুক্ত কোন দেশের নাগরিক হতে হয়।
নির্বাচনের শুরুতে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকা থেকে ভোটারদের সরাসরি ভোটে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে একজন এমপি নির্বাচিত হন। যিনি হাউজ অব কমন্সের সদস্য হন। এই প্রক্রিয়াটি ফার্স্ট পাস্ট দ্যা পোস্ট নামে পরিচিত। হাউজ অব কমন্সে যে দলের এমপি সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়, তারাই তাদের দলের নেতা নির্বাচন করেন। যিনি পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং টেন ডাউনিং স্ট্রিটের কর্তা হন। কোন দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে কোয়ালিশন সরকার গঠন করতে পারে। এছাড়া ব্রিটিশ সংসদে বিরোধী দল একটি ছায়া মন্ত্রীসভা গঠন করে সরকারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ, সমালোচনা-আলোচনা করে থাকে।
সরাসরি ছাড়াও দুটি মজার ভোট দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে ব্রিটেনে। কোন ভোটার যদি ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে না পারেন, তবে ডাক বিভাগের মাধ্যমে বিশ্বের যেকোন জায়গা থেকে তার ভোট পৌঁছে দিতে পারেন নির্বাচন কমিশনে। মনোনীত ব্যক্তির মাধ্যমেও, ভোট দেয়া যায়।
দীর্ঘদিন ধরেই দেশটিতে কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টির মধ্যেই মূলত নির্বাচনী লড়াই দেখা যায়। ভোটের দিন থেকে ২৫ দিনের মধ্যে যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করতে হয়। ১৯৩৫ সাল থেকে বৃহস্পতিবারেই হয়ে থাকে ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচন। রীতি অনুযায়ী আগামী ১২ই ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় শুরু হয়ে ভোট চলবে রাত দশটা অবধি ।
বিশ্বের অনেক দেশের মতই, নির্বাচনের সময় ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীই দায়িত্ব পালন করেন। অর্থাৎ নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোন ব্যবস্থা ব্রিটিশ সংবিধানে নেই।