অর্থনীতি, বিশেষ প্রতিবেদন

মাত্র ৫ শতাংশের অজুহাতে সব গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব

শামীম আহমেদ

ডিবিসি নিউজ

মঙ্গলবার ২৫শে জানুয়ারী ২০২২ ১১:১১:৪১ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

মাত্র ৫ শতাংশ আমদানিকৃত এলএনজি বাড়তি দামে কেনার অজুহাতে সব গ্যাসেরই দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। ১১৭ শতাংশ হারে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসির কাছে। ভোক্তা অধিকার ক্যাব বলছে গ্যাস কোম্পানিগুলোর অদক্ষতা, অপচয়, দুর্নীতির কারণে বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়। এসব বন্ধ হলে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হয় না। ব্যবসায়ীরাও মনে করেন এই মুহুর্তে গ্যাসের দাম বাড়ালে সংকটে পরবে অর্থনীতি।

পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৩শ' কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়। এসব গ্যাসের মধ্যে ৭৮ শতাংশ তথা ২৩০ কোটি ঘনফুট আসে নিজস্ব গ্যাস ক্ষেত্র থেকে। ১৭ শতাংশ তথা ৫১ কোটি ঘনফুট আসে কাতার ও ওমান সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় এলএনজির মাধ্যম। আর বাকি ৫ শতাংশ তথা ১৫ কোটি ঘনফুট কেবল আর্ন্তজার্তিক খোলা বাজার থেকে এলএনজি কেনা হয়।

গত এক বছর ধরে এলএনজির আন্তর্জাতিক বাজার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এশিয়ার বাজারে প্রতি এমএমবিইউটি এলএনজির দাম ৮ ডলার থেকে বেড়ে ৪৮ ডলারে স্পর্শ করলেও বর্তমানে এই বাজার কমতে শুরু করেছে। চলতি মাসের  শুরুর দিকে এই দাম এশিয়ার বাজারে ৩৩ ডলারে নেমে আসে। এই বাড়তি দামের অজুহাতেই বাংলাদেশের গ্যাস কোম্পানিগুলো একযোগে ১১৭ শতাংশ দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে।

ক্যাব এর জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, ৫ শতাংশ গ্যাসের দাম সাড়ে তিন গুন বেড়েছে। সেই দাম বাড়ার কারণে ভোক্তা পর্যায়ে সমুদয় খরচ বেড়ে গেছে ১১৭ শতাংশ। এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? আমদানিকৃত পণ্যের দাম যখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেড়ে যায়, তখন সরকার সেটার শুল্ক-ভ্যাট কমিয়ে সেটা নিয়ন্ত্রণে রাখে। সেটা যদি বেড়েই যায় সরকার শুল্ক-ভ্যাট কমিয়ে দিতে পারতো।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই বলছে, করোনার সময় গ্যাসের দাম বাড়ালে বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় পিছিয়ে যাবে।

এফবিসিসিআই এর সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু জানান, গত বছরের অক্টোবরে যখন কোভিড কমে এসেছিল তখন থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প কারখানা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। এই মুহূর্তে যদি দাম বাড়ানো হয় তাহলে আমাদের রপ্তানিমুখী শিল্প বিশ্ব বাজারে টিকে থাকতে পারবে না। রপ্তানিমুখী শিল্প কমে যাবে যার প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে পড়বে।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন-ক্যাবের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গ্যাস কোম্পানিগুলোর অদক্ষতা, অপচয়, দুর্নীতি ও চুরির কারণে বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয় বছরে। যার পুরো অর্থটাই যায় সাধারণ মানুষের পকেট থেকে। এসব বন্ধ করতে পারলে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হয় না।

আরও পড়ুন