জাতীয়, কৃষি

মিনিকেট চাল নিয়ে মন্ত্রী ও সচিবের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য

Kamrul Islam Rubel

ডিবিসি নিউজ

সোমবার ২০শে ডিসেম্বর ২০২১ ০৪:৩৮:৩১ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

মিনিকেট চাল নিয়ে খাদ্যমন্ত্রী ও খাদ্যসচিবের তথ্যে দেখা দিয়েছে গরমিল। মন্ত্রী বলছেন, মিনিকেট নামে আসলে কোনও চাল নেই, আর চাল কেটে সরু করে মিনিকেট নামে চালানোর তথ্যটিও সঠিক নয়। অন্যদিকে, সচিবের দাবি, চাল কেটে সরু করে মিনিকেট নামে বিক্রি হয় বাজারে।

বাজারে মিনিকেট চাল নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। এর পুষ্টিগুণ নিয়েও নানা প্রশ্ন। পুষ্টিগুণ নষ্ট করে বিভিন্ন অটোরাইস মিলে চাল কেটে বাজারজাত এবং বিক্রি বন্ধ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে, গত ২১শে নভেম্বর  রুল জারি করে হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে চাল কেটে বা ছেঁটে পুষ্টিগুণ নষ্ট করে বাজারজাত বা বিক্রি করা বন্ধে নির্দেশনা তৈরির কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তাও রুলে জানতে চাওয়া হয়।

এমন বাস্তবতায় সরকার একটি নীতিমালা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার আলোকে ধানের নামেই চালের নাম হবে। সচিবালয়ে আন্তর্জাতিক পুষ্টি অলিম্পিয়াড নিয়ে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জানান খাদ্যসচিব নাজমানারা খানুম।

এ পর্যন্ত ঠিকই ছিল। এরপরই মিনিকেট চাল নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমানারা খানুম ও মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের বক্তব্যে গরমিল দেখা দেয়।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, মিনিকেট নামে আসলে কোনও চাল নেই, মোটা চাল কেটে সরু করে মিনিকেট নামে বাজারে বিক্রির তথ্যটিও সঠিক নয়। আপনাকে মিলে যেতে হবে, পর্যবেক্ষণ করতে হবে। চালকে কাটতে কাটতে কিন্তু ছোট করে না। ছোট করলে তার ওয়েট লস হবে, ওয়েট লস হলে তার পোষাবে না। তারা পলিশ করে, পলিশে ওজন কমে না। আমাদের সবার একটা ভুল ধারণা যে চাল কেটে ছোট করা হয়। কিন্তু, ঘটনা তা না। অন্যান্য জাতের ধানকে এসব ধানের চাল বলে বিক্রি করা হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, এই সাদা চকচকে চালে কোনও পুষ্টি নেই। এ সময় বার বার লাল চাল খাওয়ার ওপর জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, লাল চাল খান, এতে পুষ্টিগুণ ঠিক থাকে।

একই সঙ্গে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পরও দাম বৃদ্ধি নিয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধনচন্দ্র মজুমদার। তিনি আরও বলেন, কৃষক উৎপাদিত ফসলের দাম না পেলে পুষ্টি তো দূরে থাক আপনি তো খুঁজেই পাবেন না। কৃষকরা যে এখনো ধান উৎপাদন করে আমাদের খাওয়াচ্ছে, তাদের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

অথচ খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমানারা খানুম বলেন, চাল কেটে সরু করে মিনিকেট নামে বেচাকেনা হয় বাজারে। এ বিষয়ে একটি গবেষণা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ওই গবেষণার ফলাফল আমরা বিভিন্ন জায়গায় জানিয়েছি। কৃষি মন্ত্রণালয়কেও চিঠি দিয়েছি।

এর আগে, নাজমানারা খানুম বলেন, আমরা ইতোমধ্যে একটা রিসার্চ ওয়ার্ক করেছি। এটা সত্যি বাজারে মিনিকেট নামে চাল বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু মিনিকেট নামে ধান নেই বললেই চলে। কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে এক সময় মিনিকিটে করে বিদেশ থেকে ধান আসছিল, তখন সেই কিটের নাম অনুসারে গ্রামের মানুষ নাম দিয়েছে মিনিকেট। এখন ব্রি-২৮ ও ২৯ ধান ও মোটা ধানকে মিনিকেট বলছে।

খাদ্যসচিব জানান, একটা ছাঁটাই নীতিমালা করছি। ওই রিসার্চের ফলাফলকেও বিভিন্ন পর্যায়ে পাঠিয়েছি। ধান যেটাই হোক নাম দিচ্ছে মিনিকেট, এটা তাদের ব্র্যান্ড নেম। আমরা এখন চেষ্টা করব, ব্র্যান্ডিং আপনি যে নামেই করুন, মূল ধানের সোর্স (জাত) লিখতে হবে। সেই কাজটি আমরা করছি।

এছাড়া একটি ছাঁটাই নীতিমালা করা হয়েছে। এ নীতিমালা অনুযায়ী ধানের ৮ শতাংশ পর্যন্ত ছাঁটাই করা যাবে। কিন্তু, অনেক জায়গায় ধানের ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাঁটাই করা হচ্ছে। সেজন্য ছাঁটাই নীতিমালা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন