জাতীয়, অন্যান্য

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানি শুরু মঙ্গলবার

Kamrul Islam Rubel

ডিবিসি নিউজ

সোমবার ৯ই ডিসেম্বর ২০১৯ ০৭:৩৬:১১ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

গণহত্যার দায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা মামলার শুনানি শুরু হচ্ছে কাল। মামলার বিপক্ষে দাঁড়াতে এরইমধ্যে হেগ-এ পৌঁছেছেন অং সান সু চি।

রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা মামলার শুনানি শুরু হচ্ছে আগামীকাল (১০ই ডিসেম্বর)। ন্যায়বিচার মিলবে বলে আশা করছেন, নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। মামলার শুনানিতে যোগ দিতে পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল নেদারল্যান্ডের হেগ-এ যাচ্ছে।

২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের সেনাদের দমনপীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন জামালিদা বেগম। সেদিনের দুঃসহ স্মৃতি এখনও ভুলতে পারেননি তিনি। আন্তর্জাতিক আদালতে গাম্বিয়া মামলা করায় কিছুটা স্বস্তিতে জামালিদা বেগমের মতো বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা। মিয়ানমার সরকার, দেশটির সেনাবাহিনী ও অং সান সু চি'কে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দাবি তাদের।

জামালিদা বেগম বলেন, ওরা আমাদের চোখের সামনেই বাবা, ভাই, স্বামীদের হত্যা করে, আমাদের শিশু সন্তানদের পুড়িয়ে মেরেছে। আন্তর্জাতিক আদালতের কাছে দাবি জানাচ্ছি, মিয়ানমার সরকার আর সেনাদের যাতে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। পুরো বিশ্বের সামনে যেন অং সান সু চি'র বিচার করা হয়।'

গুলফারাজ বেগম বলেন, 'মিয়ানমারের সেনাদের হাতে আমার পরিবারের আট জন প্রাণ হারিয়েছে। তাদের হত্যার বিচার চাই।'

আরেক রোহিঙ্গা রশিদ আহমেদ বলেন, 'বার্মিজ সেনারা আমাদের ঘরে আগুন দিয়েছে। আমার পরিবারের ১৮ সদস্যের মধ্যে ১২জনই ওই আগুনে পুড়ে মারা যায়।'

আন্তর্জাতিক আদালতে ন্যায়বিচার মিলবে, এমন আশা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের। আন্তর্জাতিক আদালতে যারা এই মামলা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান রোহিঙ্গারা।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা আবুল ফায়াজ বলেন, 'অং সান সু চি যখন বন্দি ছিলেন, তখন আমরা তার জন্য দোয়া করেছি। কিন্তু, তিনি আমাদের পক্ষে দাঁড়াননি। আমাদের এই অবস্থার জন্য তিনিও সমান দায়ী।'

মোহাম্মদ আলম বলেন, 'অং সান সু চিকে অভিযুক্ত করে মামলা করায় আমরা খুশি। গাম্বিয়াসহ যেসব দেশ এই মামলায় সহায়তা করেছে, আমরা তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞ। আশা করছি ন্যায়বিচার পাব।'

মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার, নেদারল্যান্ডসের দি হেগ-এ আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার শুনানি চলবে। মামলার বিপক্ষে দাঁড়াতে এরইমধ্যে হেগ-এ পৌঁছেছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি। তাকে সাহায্য করতে একদল আন্তর্জাতিক আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে মিয়ানমার সরকার।

এদিকে, মিয়ানমারকে বয়কটের ডাক দিয়েছে ১০টি দেশের ৩০টি মানবাধিকার সংগঠন।

গাম্বিয়ার পক্ষে মামলার শুনানিতে যোগ দিতে পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে যাচ্ছে বাংলাদেশের ২০ সদস্যদের একটি প্রতিনিধিদল।

২০১৭ সালের ২৫শে আগস্ট মিয়ানমারের সেনাদের দমন পীড়নের মুখে বাংলাদেশে নতুন করে পালিয়ে আসে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ বলে আখ্যা দেয় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন।

আরও পড়ুন