করোনাকালে অনুমোদনহীন রিজেন্ট হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা ও টেস্টের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়াই নয়, গাড়িতে ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড ও হুটার ব্যবহার করতেন শাহেদ। ছিলো সরকারি দপ্তরের স্টিকারও। কাউকে তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে ব্যবহার করেছেন দিনের পর দিন।
করোনা মহামারিতে চিকিৎসা ও টেষ্টের নামে জালিয়াতি গেলো দুদিন ধরেই আলোচনায় রিজেন্ট হাসপাতাল ও মো. শাহেদ। অভিযানে সাহেদের ব্যাক্তিগত গাড়িটিও জব্দ হয়। সাদা রংয়ের এক্সিও মডেলের গাড়িটির রেজিষ্টেশনও নেই। তার গাড়িটির একটি ফ্ল্যাগ ষ্ট্যান্ডও আছে।
বাংলাদেশ ফ্ল্যাগ রুলস, ১৯৭২ এর সংশোধন হয় ২০১০-এ। মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ কর্তৃক বাংলাদেশের পতাকা বিধিমালায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, কারা ব্যবহার করতে পারবেন। যার মধ্যে শাহেদ কোনভাবেই তা ব্যবহার করতে পারেন না।
সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহিদ খান বলেন, 'সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা, মন্ত্রী পদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি, বিদেশি দূতাবাসের প্রধানগণ, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সমপদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিরা রাজধানীর বাইরে গেলে গাড়িতে ফ্ল্যাগে ওড়াতে পারবেন। এটা হলো ফ্ল্যাগের নিয়ম। অনেক গাড়িতেই ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড লাগানো থাকে এটা দেখা যায়। এটা তারা লাগিয়ে প্রমাণ করতে চান তারা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কোন ব্যক্তি। এটা প্রমাণ করার জন্যই হয়তো তারা ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড লাগিয়ে থাকেন।'
গাড়িটিতে আছে সাইরেন বাজানোর হুটার, যা জরুরি সেবা অথবা আইনশৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকে এমন গাড়িতে ব্যবহার করার নিয়ম। শুধু তাই নয় গাড়ির গ্লাসও কালো করা হয়েছে, যা আইনত অপরাধ। রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স ও আইনশংখলা রক্ষায় নিয়োজিত গাড়ি এবং জরুরি সেবার গাড়ি ব্যতীত অন্য কোনো বেসরকারি সংস্থা বা ব্যক্তির গাড়িতে হুটার ও বিকন লাইট ব্যবহার করা যাবে না, ধরা পড়লেই শাস্তি নিশ্চিত।
ডিএমপি ট্রাফিকের (উত্তর) যুগ্ম কমিশনার মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'সিকিউরিটি আসপেক্টে আমরা কিছু হুটার বাজাই। হুটার বাজানোর কিছু রুলস আছে। আপনি ইচ্ছে করলেই পাবলিক গাড়িতে বা ব্যক্তিগত গাড়িতে হুটার বাজাতে পাববেন না। অবৈধ হুটারের বিরুদ্ধে আমাদের ট্রাফিকের অভিযান আগেও ছিলো, এখনও চলমান আছে।'
নিয়ম যাই হোক গাড়িতে ফ্ল্যাগ ষ্ট্যান্ড এবং হুটার ব্যবহার করেই শাহেদ ঘুরে বেরিয়েছেন নিদের পর দিন।