নারীকে ক্যাবের মধ্যে খুন করে মরদেহ নিয়ে দিনভর শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ান অ্যাপ ক্যাবের চালক।
এরপর রাত গভীর হলে খালের মধ্যে মরদেহ ফেলে দেন। এদিকে ওই দিনভর নিখোঁজ থাকায় পরিবারের লোকজন পুলিশের দ্বারস্থ হয়। পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে, তিনি হত্যার শিকার হয়েছেন।
রাতেই উদ্ধার হয় মরদেহ। পরে অভিযুক্ত ক্যাব চালককে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার সাদার্ন অ্যাভিনিউতে।
আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত মুদিয়ালি এলাকায়। ৪৫ বছরের লক্ষ্মী দাসের বাড়ি ওই এলাকায়। একই এলাকাতে থাকেন অ্যাপ ক্যাব চালক শিবশঙ্কর মান্না। লক্ষ্মী মুদিয়ালি এলাকায় পরিচারিকার কাজ করেন।
তার স্বামী সুভাষ দাস জানান, অন্য দিনের মতো শুক্রবার সকালে কাজে যান লক্ষ্মী। কিন্তু দুপুর বেলা বাড়ি না ফেরায় তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে পরিবারের লোকজন। লক্ষ্মীর স্বামী জানতে পারেন, সাড়ে ১০টা নাগাদ একটি বাড়ির কাজ শেষ করে বেরিয়েছিলেন লক্ষ্মী। এ দিকে লক্ষ্মীর ফোনও বন্ধ পাচ্ছিলেন তারা। এরপর চারু মার্কেট থানায় অভিযোগ জানান লক্ষ্মীর স্বামী সুভাষ দাস।
এ দিকে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র থেকে লক্ষ্মীর পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন পাড়ার ক্যাব চালক শিবশঙ্কর মান্নার সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে লক্ষ্মীকে। এই খবরের মধ্যে শিবশঙ্করেরও কোনো খোঁজ মিলছিলো না। তিনিও বাড়িতে ফেরেননি।
পুলিশ জানায়, কয়েকমাস আগে শিবশঙ্করকে ক্যাবের কিস্তির টাকা মেটানোর জন্য ৩০ হাজার টাকা ধার দিয়েছিলেন লক্ষ্মী। সেই টাকা তিনি বার বার ফেরত চাইছিলেন। কিন্তু টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন না শিবশঙ্কর। এই সূত্র মিলিয়ে পুলিশ শিবশঙ্করের খোঁজ করতে থাকে। শেষে গভীর রাতে শিবশঙ্করের হদিস মেলে। তাকে পুলিশ জেরা করতে শুরু করলে তিনি খুনের কথা স্বীকার করেন।
পুলিশের বরাতে আনন্দবাজার বলছে, জেরায় অভিযুক্ত জানায় শুক্রবার সাড়ে ১০টা নাগাদ রাস্তায় লক্ষ্মীর সঙ্গে দেখা হয়ে যায় তার। লক্ষ্মী টাকা চাইলে তাকে নিজের উঠতে বলেন শিবশঙ্কর। তারপর সাদার্ন অ্যাভিনিউতে রাস্তার পাশে গাড়ি দাড় করিয়ে এসি চালিয়ে আচমকাই লক্ষ্মীর গলায় ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন।
ক্যাবের মধ্যেই মৃত্যু হয় লক্ষ্মীর। তারপর তার দেহ নিয়ে শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে থাকেন শিবশঙ্কর। শেষ পর্যন্ত রুবি মোড় থেকে কিছুটা ভিতরে খালের মধ্যে দেহটা ফেলে পালিয়ে আসেন। পরে ভবানীপুর এলাকা থেকে শিবশঙ্করের রক্তমাখা গাড়ি উদ্ধার হয়।