শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে সারা দেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।
বুধবার (৬ অক্টোবর) সকালে মঙ্গলঘট স্থাপন, সমবেত চণ্ডীপাঠ এবং বিশেষ পূজায় মর্ত্যে আবাহন করা হয় দেবী দুর্গাকে। সনাতন শাস্ত্র অনুযায়ী, পিতৃপক্ষের অবসান বা দেবীপক্ষের পূর্ববর্তী অবস্থাকে বলা হয় মহালয়া। শাস্ত্র মতে, ব্রহ্মার বর অনুযায়ী কোনো মহিষাসুরকে একমাত্র নারী শক্তির দ্বারা সম্ভব ছিল বধ করা। কোনো মানুষ বা দেবতা দ্বারা তাকে বধ করা সম্ভব ছিল না। তাই ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব শক্তি দ্বারা সৃষ্ট নারীশক্তি সিংহবাহিনী মা দুর্গা মহিষাসুরকে পরাজিত করে হত্যা করেন। শাস্ত্র অনুযায়ী, মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। আর এভাবেই মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গার আগমন ঘটে মর্ত্যলোকে।
মহালয়া উপলক্ষ্যে দেশব্যাপী সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নানা আচার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এরমধ্যে চট্টগ্রামের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে আয়োজন করা হয় চণ্ডীপাঠ, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, আলোচনা সভা, বস্ত্র ও প্রসাদ বিতরণ। বুধবার সকালে নগরীর জে এম সেন হলে চণ্ডীপাঠের আয়োজন করে মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ। বরিশাল নগরীর রাধা গোবিন্দ জিও মন্দিরে বিশেষ অনুষ্ঠোনের আয়োজন করে অগ্রগ্রামী যুব সংঘ। পরে চণ্ডীপাঠ, গান, নাচ, নাটক মঞ্চস্থ করেন শিল্পীরা।
সিলেট নগরীর বলরাম জিউড় আখড়ায় চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে দেবীবন্দনা করা হয়। তর্পন শ্রাদ্ধ চলে সুরমা নদীসহ নগরীর বিভিন্ন পুকুরে। এছাড়া, রক্তদান কর্মসূচি, সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় উদযাপিত হয় বিশেষ তিথি। খুলনার রূপসা মহাশ্মশান মন্দিরে মহালয়ার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় সকাল সাড়ে ৭ টায়। মহালয়ার চণ্ডীপাঠ ও সঙ্গীত আকৃষ্ট করে ভক্তদের।
রংপুরের কালীবাড়ি মন্দিরে আয়োজন করা হয় শুভ মহালয়ার। এছাড়া নগরীর ১৬০ মন্দির-মণ্ডপে চণ্ডীপাঠের মধ্যে দেবী বরণের আয়োজন শুরু হয়। ময়মনসিংহ নগরীর দুর্গাবাড়ি মন্দিরে মহালয়ার শুরুতে চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গাকে মর্ত্যলোকে আগমনের আমন্ত্রণ জানান সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
পঞ্জিকা অনুযায়ী, দেবী এবার আসবেন ঘোড়ায় চড়ে, বিদায় নিবেন দোলায় চড়ে।