বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল
আন্তজার্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মাদি এক বিবৃতি বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজার সময় তাদের বাড়িঘর, মন্দির ও পূজামণ্ডপে দাঙ্গাকারীদের হামলা দেশে ক্রমবর্ধমান সংখ্যালঘু বিরোধী মনোভাবের লক্ষণ। অনেক বছর ধরে বাংলাদেশে বার বার ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে হামলা, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর এবং উপাসনার স্থানে হামলা হয়েছে। এতে এটাই প্রমাণ হয় যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে সরকার। ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয়কে পুঁজি করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানো মানবাধিকারের ভয়াবহ লঙ্ঘন। এ অবস্থায় দেশের সংখ্যালঘুদের সমস্যা সমাধানে সরকারের উচিত অবিলম্বে সুচিন্তিত পদক্ষেপ নেয়া।
সোমবার দেয়া ওই বিবৃতিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে ভুক্তভোগীরা যাতে ন্যায়বিচার এবং কার্যকর প্রতিকার পান তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। এ ঘটনায় দ্রুত পূর্ণাঙ্গ ও পক্ষপাতিত্বহীন এবং স্বচ্ছ তদন্ত করতে হবে এবং সহিংসতা, ভাঙচুরের জন্য যারা সন্দেহভাজন বলে দায়ী তাদেরকে সুষ্ঠু বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায় সংস্থাটি।
বিবৃতিতে বাংলাদেশে গত কয়েকদিনে ঘটে যাওয়া ঘটনার দিকে আলোকপাত করা হয়েছে। এতে বলা হয়, গত ১৩ই অক্টোবর কুমিল্লায় একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কুরআন অবমাননার অভিযোগে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় কমপক্ষে সাতজন নিহত হয়েছেন। ১৩ই অক্টোবর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কয়েক শত মানুষ।
স্থানীয় প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে এতে আরো বলা হয়, ১৭ই অক্টোবর রংপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের কমপক্ষে ২৫টি বাড়ি ও দোকানে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
এর আগে ২০১৬ সালে ইসলাম অবমাননা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেয়ার অভিযোগে নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েক শত বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সেই ঘটনায় কয়েক হাজার মানুষের বিরুদ্ধে আটটি মামলা করেছে কর্তৃপক্ষ। ২০১২ সালে বৌদ্ধদের কমপক্ষে ৬টি উপাসনালয় ও কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এক্ষেত্রেও পবিত্র কোরআন অবমাননার পোস্ট দেয়া হয় ফেসবুকে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই সহিংসতা দেখা দেয়।