স্বল্প খরচে অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর মেশিন তৈরি করে সাড়া ফেলেছে পাবনার স্কুলছাত্র তাহের মাহমুদ তারিফ।
যন্ত্রটি দিয়ে প্রতি মিনিটে ২৫ লিটার অক্সিজেন উৎপাদন করা যায় বলে দাবি তার। ল্যাব টেস্টে উত্তীর্ণ হলে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা যাবে বলে মত চিকিৎসকদের।
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার একটি স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহের মাহমুদ তারিফ। ছোটবেলা থেকেই রয়েছে উদ্ভাবনের আগ্রহ। গেলো বছরের আগস্টে অক্সিজেনের অভাবে মারা যায় তার বাবা। এর পর থেকেই করোনা আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিজ্ঞা করে তারিফ। পরিকল্পনা নেয় কম খরচে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মেশিন তৈরির।
তার উদ্ভাবিত যন্ত্রে প্রথমে বাতাসকে একটি সিলিন্ডারে প্রবেশ করানো হয়। পরে বাতাস থেকে অন্যান্য উপাদান পৃথক করে বেছে নেয়া হয় শুধু অক্সিজেনকে।
স্কুল কর্তৃপক্ষের সহায়তায় ৬৫ হাজার টাকায় তৈরি যন্ত্রটি প্রতি মিনিটে ২৫ লিটার অক্সিজেন উৎপাদন করতে সক্ষম- দাবি তারিফ ও তার শিক্ষকদের।
তাহের মাহমুদ তারিফ বলেন, "নিজের আপনজনকে এমন অক্সিজেন বা এমন কিছুর অভাবে যদি মারা যেতে দেখা যায় তো কেমন লাগতে পারে-? সে থেকেই আমার একটা ধারনা কাজ করে এবং আমি নেট থেকে এগুলো জানলাম। এর সরঞ্জামগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।"
পাবনা সাঁড়া মাড়োয়ারী মডেল স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আয়নুল ইসলাম বলেন, "দেখা গেছে অক্সিজেন ৯২/৯৩ আছে, পরে পরীক্ষামূলকভাবে দেখা গেছে ৯৮/৯৯ হয়ে গেছে। এভাবে আমরা বুঝতে পেরেছি অক্সিজেন কাজে লেগেছে।"
শরীরে অক্সিজেনের লেভেল কমে যাওয়া করোনা রোগীদের জন্য এই মেশিন খুবই কার্যকরি-বলছেন চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ল্যাবটেস্টের মাধ্যমে যন্ত্রটিকে আরও উন্নত করা গেলে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন সম্ভব বলে মনে করছেন তারা।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সালেহ মুহাম্মদ আলী বলেন, যেহেতু একজন শিক্ষার্থী এটা তৈরি করেছেন এর কিছু ট্যাকনিকাল এরর থাকতে পারে। তবে এটা পরিচর্যা করলে এই উদ্যোগ চমকপ্রদ হতে পারে।"
পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি তারিফকে নিয়ে গর্বিত এলাকাবাসী। স্কুলছাত্র তারিফের উদ্ভাবনী দক্ষতায় সহযোগিতা দিতে এগিয়ে আসবে সরকার এমন প্রত্যাশা স্থানীয়দের।