স্ত্রীর কাছে দৈব্য নির্দেশ আসে। সেই নির্দেশ পালনে আগেই কেনা হয়েছে রাজহাঁস, রামছাগল ও ঘোড়া। এবার স্ত্রীর কাছে নির্দেশ আসে হাতি কেনার। জমিজমা বেচে হাতি কিনে ফেললেন স্বামী। এই নিয়ে তোলপাড় লালমনিরহাটে। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি এলাকাবাসীর।
দৈব আদেশ পেয়েছেন স্ত্রী। কিনতে হবে হাতি। তাই জমি, গাছ বিক্রি করে প্রায় ১৭ লাখ টাকায় হাতি কিনলেন লালমনিরহাট সদর উপজেলার রতিপুর গ্রামের কৃষক দুলাল চন্দ্র। পরিচালনার জন্য এক মাহুতও নিয়োগ করেছেন। এর আগেও এমন আদেশে কিনতে হয়েছে, রাজহাঁস, রাম ছাগল ও ঘোড়া।
স্থানীয় একজন বাসিন্দা বলেন, 'হাতি-ঘোড়া আনছে, তাই দেখতে আসলাম। অন্য এলাকা থেকেও মানুষ আসছে দেখতে। আনন্দ-ফুর্তি করছে।'
দুলাল চন্দ্রের স্ত্রী তুলসী রানি ৮ বছর ধরে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার হাত গণনা করেন। চিকিৎসা দেন বিভিন্ন রোগের। তান্ত্রিক হিসেবে প্রসার পেতে এমন কান্ড ঘটিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকেই। আর বিষয়টি স্পষ্ট হয় দুলাল-তুসলীর বক্তব্যে।
কথিত তান্ত্রিক তুলশী রানী বলেন, 'যাদের সন্তান হয়না ঈশ্বরের শরনাপন্নে, কালীকা মাতার আর্শীর্বাদে তাদের সন্তান-সন্ততি উৎপাদন হয়। এটা দৈবযোগেই হয়।'
তুলশী রানীর স্বামী দুলাল চন্দ্র বলেন, 'হাতি নিয়ে আসার পর একটু হলেও ভক্তের সংখ্যা বেড়েছে। বাড়লে তো অবশ্যই ইনকাম বাড়বে।'
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব হয় ভন্ডামী, নয় তো তারা মানসিক বিকারগ্রস্ত। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জ্যোর্তিময় রায় জানান, 'এটা হতে পারে একটা ব্যবসা। হাতি কিনলে মিডিয়া প্রচার করবে, আরো তার প্রসার ঘটবে। এটা হতে পারে। আবার অসুস্থতার জন্যও হতে পারে।'
বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইনও মানছেন না দুলাল চন্দ্র। লোকালয়ে হাতি থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে রয়েছে উৎকন্ঠা। যদিও বন বিভাগ বলছে, বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলেই আইনের আওতায় আনা হবে তাদের।
লালমনিরহাট বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূরন নবী বলেন, 'কোন আইনের ব্যত্যয় ঘটলেই ছাড়া পাবেনা, পুলিশ রেডি। সে যদি কোন কোন আবেদনের যে নিয়ম আছে সেটা না করতে পারে, এটা এমনিতেই সিজ হয়ে যাবে।'
ঘটনা যাই হোক, তা খতিয়ে দেখার দাবি সচেতন মানুষের।