মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যাত্রার ক্ষেত্রে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিটের দাম বেড়েছে হঠাৎ করেই। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন মধ্যপ্রাচ্যগামী যাত্রীরা। তাদের বেশিরভাগই যাচ্ছেন কর্মসংস্থানের জন্য। টিকিটের বাড়তি ভাড়া সামাল দিতে দিশেহারা তারা। বলছেন, সিন্ডিকেটের কারণেই ভাড়া বেড়েছে বিমানের টিকেটের। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীও বলছেন, বিমানের টিকেটের দাম এভাবে বাড়ানো অন্যায় ও অযৌক্তিক। তবে বিমান প্রতিমন্ত্রীর যুক্তি ভিন্ন।
বাংলাদেশে থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রী যান মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। যাদের প্রায় ৯৫ ভাগই শ্রমিক। নানা টানাপোড়েনের মধ্যে বিদেশে ভাগ্য ঘোরাতে যেতে চাওয়া এই মানুষগুলোর নতুন ভোগান্তি বিমান ভাড়া। গত কয়েকদিন ধরেই টিকেটের দাম আকাশ ছোঁয়া।
এক প্রবাসী যাত্রী বলেন, ১০ দিন আগে টিকিটের জন্য গেলাম বললো ৬২ হাজার। ওই টিকিটই এখন বলছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। পরে আমি বাহরাইন থেকে ৫৫ হাজার টাকায় টিকিট এনেছি।
ভোগান্তিতে পড়া আরও এক যাত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিমানে আগে জেদ্দায় যেতে ছিল ৫৫ হাজার। এখন ১ লাখ ৭ হাজার টাকায় টিকিট নিতে হয়েছে।
যাত্রীরা বলছেন, সিন্ডিকেটের কারণেই বাড়ছে টিকিটের দাম। টিকিটের বাড়তি ভাড়া যোগাতে অনেকেরই হিমশিম অবস্থা।
জানতে চাইলে একজন ভুক্তভোগী বলেন, আমাদের মত গরীব মানুষের পক্ষে এত টাকা দেয়া সম্ভব নয়। এটা অসম্ভব। পকেট কাটার চক্র এটা।
আরও এক প্রবাসী বলেন, যার এই ৫০-৬০ হাজার টাকা যাচ্ছে তাকে তার এক বছরের আয় থেকেই এটা হিসাব করতে হবে।
বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের চেয়েও বেশি দূরত্বের দেশে ভাড়া কম। আবার, পাশ্ববর্তী দেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিমানের টিকেটের দাম তুলনামূলক কম।
বিমানবন্দরে আরও এক যাত্রী বলেন, সৌদি আরব যারা যাচ্ছেন তাদের টিকিট প্রতি ৭০ থেকে ৯০ হাজার পড়ে যাচ্ছে। সেখানে যেতে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা লাগে। আর আমেরিকা যেতে ২৩-২৪ ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু সেখানে যেতে মাত্র ৬৫ হাজার টাকা লাগে। ইন্ডিয়া, পাকিস্তানে কোথাও দাম বাড়েনি। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশে দাম বাড়তি। এটা অবশ্যই সিন্ডিকেট।
বিমানের টিকিটের এভাবে মূল্য বৃদ্ধিকে অন্যায় ও অযৌক্তিক মনে করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। তিনি বলেন, অযৌক্তিকভাবে টিকিটের দাম বাড়ানো হয়েছে। আমি মনে করি এটা অন্যায়। উনারা যুক্তি দেন কি দেন না আমি জানিনা।
তবে বেসামরিক বিমান পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীর বক্তব্য ও যুক্তি ভিন্ন। যদিও টিকিটের দাম কমানোর চেষ্টার কথা জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক নিয়মানুসারেই তারা করে। যখন ভাড়া বাড়ে এটা যাত্রী দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমরা তাদেরও অনুরোধ করেছি ক্যাবের মাধ্যমে, সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে অন্যান্য এয়ালাইন্সকে। বিমানকেও আমরা বলেছি আমাদের দেশের কর্মজীবী মানুষদের যেন কষ্ট না হয় সেটা বিবেচনায় রাখতে।
টিকিটের দাম কমিয়ে এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি চান যাত্রীরা।