সংস্কৃতি

নোয়াখালীতে হাশেম উৎসব অনুষ্ঠিত

আকরাম হোসেন

ডিবিসি নিউজ

বুধবার ১২ই জানুয়ারী ২০২২ ০৬:৫৯:১১ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

নোয়াখালী শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সাড়ম্বরে পালিত হল ‘হাশেম উৎসব।’

মঙ্গলবার (১০ই জানুয়ারি) সকাল ১০টায় উৎসব উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক খোরশেদ আলম খান। তিনি বলেন ‘অধ্যাপক মোহাম্মদ হাশেম একজন কালজয়ী গীতিকবি। তার জন্মোৎসবে যোগদান করতে পারায় আমি গর্ব অনুভব করছি।’

এরপর শুরু হয় বিভিন্ন বয়সী শিশুদের অংশগ্রহণে নোয়াখালীর আঞ্চলিক গানের প্রতিযোগীতা। এতে অংশগ্রহণ করেন জেলা শহর সহ বিভিন্ন উপজেলা শহর থেকে আগত শিশু শিল্পীরা।

দুপুর ৩টায় একটি র‌্যালি বের করা হয় যেটি শিল্পকলা একাডেমি থেকে শুরু হয়ে মাইজদী কোর্ট মসজিদে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অধ্যাপক মোহাম্মদ হাশেম এর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান আগত অতিথিরা। শ্রদ্ধা জানানোর পর অধ্যাপক মোহাম্মদ হাশেমের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়।

বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় ‘গণমানুষের শিল্পী অধ্যাপক মোহাম্মদ হাশেম’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ পাঠ করেন মোহাম্মদ হাশেম ফাউন্ডেশনের সহ সভাপতি, টিভি নাট্যকার ও পরিচালক সাজ্জাদ রাহমান।

সংগঠনের আরেক সহ-সভাপতি, সংস্কৃতিজন এমদাদ হোসনে কৈশোরের পরিচালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও অধ্যাপক মোহাম্মদ হাশেমের জৈষ্ঠ পুত্র মোস্তফা মনোয়ার সুজন। সংগঠনের সভাপতি, কবি ও সংস্কৃতিজন অ্যাডভোকেট কাজী খসরুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনায় অংশগ্রহণ করে প্রধান অতিথির ভাষণে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য প্রফেসর ড. দিদার-উল আলম বলেন, ‘অধ্যাপক মোহাম্মদ হাশেম কত বড় মাপের একজন মানুষ ছিলেন সেটা আমি এই অনুষ্ঠানে না আসলে জানতে পারতাম না। তিনি একজন শিক্ষক, একই সাথে সাধক ছিলেন। একজন শিক্ষাবিদ হওয়ার ফলে তাঁর সৃষ্টি হয়েছে মানোত্তীর্ণ।

আলোচনায় আরও অংশ নেন বাংলাদেশ বেতারের সাবেক ডিজি, সঙ্গীত শিল্পী, নারায়ণ চন্দ্র শীল,  কবি ও গবেষক অধ্যাপক শীরীন আকতার, কবি ও নির্মাতা অধ্যাপক মামুনুর রশীদ মামুন প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে সঙ্গীতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ হাসান মতিউর রহমান এবং নারায়ণ চন্দ্র শীলকে ‘হাশেম পদক-২০২২’ এ ভূষিত করা হয়। এছাড়াও সম্মাননা পদকে ভূষিত করা হয় আরও বেশ কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে। এর মধ্যে রয়েছে নোয়াখালীর প্রয়াত বরেন্য নাট্য ব্যক্তিত্ব শাহ ফরহাদ, নাট্য সংগঠন লক্ষীরায়ণপুর থিয়েটার, বাঙালি লোকসংস্কৃতি কেন্দ্র, ললিতকলা একাডেমি।

এছাড়া করোনাকালে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা পদকে ভূষিক হন কুমিল্রার চান্দিনার লিটন সরকার, পঞ্চগড়ের কাজী আল তারিক, প্রবাসীদের কল্যাণে বিশেষ অবদানের জন্য হাশেম সম্মাননা পদক পান প্রবাস বিডি নিউজ এর সম্পাদক আবু সাঈদ রিয়াজ। আঞ্চলিক গানে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা পদক পান পঞ্চগড়ের বাউল রইস।

এছাড়া আরও কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে হাশেম সম্মাননা পদক প্রদান করা হয়।

পদক প্রদানের পুর্বে সানজিদা সুলতানা কর্তৃক নির্মিত প্রামান্য চিত্র ‘সুর সম্রাট মোহাম্মদ হাশেম প্রদর্শিত হয়। উৎসবে বিপুল সংখ্যক শিশুদের অংশগ্রহণে সঙ্গীত ও নৃত্যানুষ্ঠান দর্শকদের প্রশংসা কুড়াতে সমর্খ হয়।

উল্লেখ্য, এই প্রথমবারের মতো নোয়াখালীতে অনুষ্ঠিত হলো ‘হাশেম উৎসব।’ ভবিষ্যতে এটি আরও বর্ণাঢ্যভাবে উদযাপিত হবে বলে জানান অধ্যাপক মো. হাশেম এর বড় কন্যা শাহনাজ হাশেম কাজল। সংগঠক কামাল উদ্দিন বলেন, এটা সবে শুরু। আমাদের লক্ষ্য অনেকদূর পর্যন্ত যাওয়া। অধ্যাপক মোহাম্মদ হাশেম এর সৃজনকর্ম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা বছরব্যাপী চলবে বলে জানান সংগঠনের সহ সভাপতি সাজ্জাদ রাহমান।

আরও পড়ুন