রাজধানী, স্বাস্থ্য

হাসপাতালে আগুনের ঘটনায় ইউনাইটেডের তথ্যে গরমিল

ডিবিসি নিউজ ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

শুক্রবার ২৯শে মে ২০২০ ০৩:৩৮:২৯ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

রাজধানীর ইউনাইটেড হসপিটালে আগুনের ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের দেয়া তথ্যের সাথে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যে গরমিল পাওয়া গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, মৃত ৫ জনের মধ্যে তিনজন করোনা পজিটিভ।

তবে নিহতদের স্বজনরা জানিয়েছেন, দুইজন করোনা পজিটিভ ছিলেন। এছাড়া নিহতদের সবাই অক্সিজেন সাপোর্টে ছিলেন কি-না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হসপিটালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে আগুন লাগে।  দূর থেকে প্রিয় স্বজনদের মৃত্যুর দৃশ্য দেখেন নিরূপায় স্বজনরা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, নিহতদের সবাই অক্সিজেন সাপোর্টে ছিলেন। তাদের মধ্যে ৩ জন করোনা পজিটিভ এবং অন্য দুজনের উপসর্গ থাকায় আইসোলেশন ইউনিটে রাখা হয়।

ইউনাইটেড হাসপাতালের কমিউনিকেশন এন্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর ডা. শাগুফা আনোয়ার বলেন, 'যে পাঁচজন রোগী ওখানে ছিলেন তারা অত্যন্ত অসুস্থ ছিলেন। করোনা সন্দেহেই তাদেরকে ওখানে রেখেছিলাম। হাইফ্লো অক্সিজেনের মধ্যে ছিলেন। ভেন্টিলেটার সাপোর্টে ছিলেন। যে রোগী রিপোর্ট নেগেটিভ আসে, রোগীর মধ্যো যদি ক্লিনিক্যালি উপসর্গ থাকে, শুধুমাত্র রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে তাকে আমরা তাকে নিরাপদ বলতে পারি না।'

হাসপাতালের তথ্যে তিনজন করোনা পজিটিভ রোগী থাকলেও, নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে দুইজন। মৃতদের মধ্যে একমাত্র নারী ৭০ বছর বয়সী খোদেজা বেগমের ছেলে মো. আলমগীর জানান, তার মা ঢাকা মেডিক্যালের পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ ছিলেন। তিনি আরও বলেন,'ঢাকা মেডিক্যালের রিপোর্ট আমি দেখিয়েছি। সেখানে করোনা নেগেটিভ ছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে জানায় মাকে ছয়তলায় সরিয়ে নেয়া হবে।বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথা বলেছে তারা।'

দ্বিতীয় করোনা নেগেটিভ রোগী ৭৪ বছরের ভেরুন এন্থনি পল। আইসোলেশন ইউনিটের বাইরেই ছিলেন তার পুত্র ও স্বজনরা। পুত্রবধুর লেখা চিঠিতে ছিল বাবার সুস্থতা কামনার আকুতি। আইইডিসিআরের পরীক্ষায় নেগেটিভ হলেও, অপেক্ষায় থাকতে হয় ইউনাইটেডের পরীক্ষার রিপোর্টের জন্য। বিকেল ৫টার দিকে করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে ভেরুন এন্থনি পলের। করোনা না হলেও, তার জীবন গেল অব্যবস্থাপনার আগুনে।

তৃতীয় করোনা নেগেটিভ রোগী ৪৫ বছর বয়সী রিয়াজুল আলম। উপসর্গ থাকায় আইসোলেশনে ছিলেন তিনি। স্বজনরা জানান, আইসোলেশনে থাকলেও, অক্সিজেন সাপোর্টে ছিলেন না। জীবনের সুরক্ষায় হসপিটালে গিয়ে জীবন হারালেন তিনি। রিয়াজুলের স্ত্রী ফৌজিয়া আক্তার জেমি বলেন,'আমার হাজবেন্ড সুস্থ ছিলেন। তিনি যেন আরও একটু ভালো থাকেন সেজন্য তাকে হাসপাতালে রাখা। ভেতরে এত বেশি দাহ্য পদার্থ ছিলে যে তিনি বেরিয়ে আসতে পারেননি।'

রিয়াজুলের প্রবাসী বোন গুলশান আক্তার বলেন,'শুধু মাত্র ইউনাইটেড হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার কারণে খুন হয়েছেন তার ভাই। সব ত্রুটিগুলোকে জনগণের সামনে হাজির করুন। আমরা এই অপমৃত্যুর বিচার চাই।'

এ ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন নিহতদের স্বজনরা।   

 

আরও পড়ুন