বালু উত্তোলনসহ নানা কারণে হুমকির মুখে পড়েছে বরগুনার তালতলীর পর্যটন সম্ভাবনাময় 'শুভ সন্ধ্যা' সমুদ্র সৈকত। ভূমিক্ষয় হয়ে হারিয়ে যাচ্ছে শতশত একর বনভূমি। নির্বিচারে বালু উত্তোলনের ফলেই এমন বিরূপ প্রভাব পড়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
একদিকে বিস্তীর্ণ জলরাশি, অন্যদিকে সবুজ ঝাউবনে ঘেরা আকর্ষণীয় সমুদ্র সৈকত 'শুভ সন্ধ্যা'। এটি বরগুনার তালতলী উপজেলার তিন নদী পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বরীর মোহনা। গোধুলীতে সূর্যাস্ত বেশ উপভোগ্য হওয়ায় অল্পদিনেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে এ পর্যটনকেন্দ্র। কিন্তু এখন 'শুভ সন্ধ্যা' সমুদ্র সৈকত দেখে হতাশ দর্শনার্থীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আইসোটেক নামের একটি কোম্পানি অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের পর থেকেই সৈকতে ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনের ফলে ধ্বংসের শেষ পর্যায়ে ঝাউবন। আর এ পর্যটন কেন্দ্র ঘিরে ব্যবসায়ীদের এখন মাথায় হাত।
এ ব্যাপারে প্রশাসনকে বারবার জানানো হলেও, কোনও ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ জনপ্রতিনিধিদের। তালতলী বরগুনার উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবিউল কবির জমাদ্দার বলেন, 'নিজে গিয়ে ও পাবলিক সহ ড্রেজার সরানোর জন্য তাদের বলেছি তারা সরেনি। তাদের কথাও আমরা বুঝিনা।'
তালতলীর নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজী বলেন, 'অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এই শুভ সন্ধ্যা সৈকত আজ ধ্বংসের শেষ প্রান্তে।'
তালতলী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনু জানান, 'আমাদের ইউএনও সাহেবকে জানানো হয়েছে। তারপরও আমরা কোন কার্যকরী সিদ্ধান্ত পাইনি।'
স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণসহ নানা পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিলেন বরগুনা জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ। তিনি বলেন, 'ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে সেখানে ১০২ কোটির টাকার মহাপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ভাঙন রোধের ব্যবস্থা থাকবে। সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হবে। বনবিভাগকেও বলা হয়েছে ভাঙন রোধে যেন বৃক্ষরোপণ করা হয়।'
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে 'শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত'।