বাংলাদেশ, ভিডিও, জাতীয়, বিশেষ প্রতিবেদন

একাত্তরের ১লা মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করেন ইয়াহিয়া

হ্যাপী মাহমুদ

ডিবিসি নিউজ

সোমবার ১লা মার্চ ২০২১ ০৭:৪৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

একাত্তরের ১লা মার্চ তখনকার সামরিক স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে আপামর বাংলার মানুষ।

অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর ২৫শে মার্চ পর্যন্ত নানা ঘটনার মধ্যদিয়ে ধীরে ধীরে বাংলার স্বাধিকার আন্দোলন রূপ নেয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে।  ২৬শে মার্চে তা পরিণত হয় মুক্তিযুদ্ধে। 

একাত্তরের পহেলা মার্চ। রাজধানীর মতিঝিলে হোটেল পূর্বানীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠক চলছে। দুপুর একটা। এমন সময় হঠাৎ করে ঘোষণা এলো ৩রা মার্চে ডাকা জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করার। 

সত্তরের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর বাঙালি যখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার জন্য ক্ষণ গুণছিল ঠিক তখনই পাকিস্তানের তখনকার প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানের এমন ঘোষণা আসে। সঙ্গে সঙ্গে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে গোটা পূর্ববাংলা।

এরই মধ্যে ৩রা মার্চের অধিবেশনের জন্য ঢাকায় এসে জড়ো হয়েছিলেন পরিষদের সব সদস্য। বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ঢাকাসহ সারাদেশের সর্বস্তরের স্বাধীনতাকামী মানুষ।

সাবেক ছাত্রনেতা অজয় দাশগুপ্ত বলেন, 'এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে হাজার হাজার মিছিল সমাবেশ বের হয়ে যায়। সেটা ২৫শে মার্চ পর্যন্ত চলতে থাকে। পূর্ব পাকিস্তান মূহুত্বে বাংলাদেশে পরিনত হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।'

ছাত্র, শিক্ষক, আইনজীবী, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, কলকারখানার শ্রমিকসহ সর্বস্তরের মানুষ নেমে আসে রাস্তায়। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজপথ।

সাবেক ছাত্রনেতা শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যারয়ে আমরা যারা ছাত্রলীগে ছিলাম এবং যারা ডাকসুতে ছিলাম সবাই মিলে বটতলায় একটা সমাবেশ করলাম। সমাদেশ শেষ করে বঙ্গবন্ধুর কি নির্দেশ সেটা জানার জন্য মিছিল হোটেল পূর্বানীতে আসলাম। বঙ্গবন্ধু বললেন না এখানে নয় তোমরা পল্টন সয়দানে চলে যাও। সেখানে আমি মেসেজ পাঠাব কি করতে হবে।' 

সংগ্রামের ঘোষণার অপেক্ষায় উন্মুক্ত স্বাধীনতাকামী বিক্ষুব্ধ মানুষ। তাদের মুখে উচ্চারিত হতে থাকে বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন কর।

জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২রা মার্চ ঢাকায় এবং ৩রা মার্চ সারাদেশে হরতালের ডাক দেন।

পহেলা মার্চ গভীর রাতে সামরিক আইন জারি করে পাকিস্তানের পরিপন্থী সংবাদ, খবর, চিত্র প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। 

আরও পড়ুন