একদিকে দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। অন্যদিকে দক্ষ শ্রমিক সংকটে ভুগছে দেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন শ্রম খাত। গবেষকরা বলেন, বাস্তবমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার অভাবে এই সংকট তৈরি হয়েছে। সংকট উত্তরণে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা- আইএলওর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে এখন ৩৬ লাখ মানুষ বেকার। যা মহামারির আগের সময়ের চেয়ে অন্তত ৫ লাখ বেশি।
লন্ডনের দ্যা ইকোনমস্টি ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্য মতে, দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা ৪৭ শতাংশ। আর বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান-বিআইডিএস বলছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলো থেকে পাস করাদের ৬৬ শতাংশই বেকার। ফলে শিক্ষিতদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে।
শিক্ষিত বেকাররা বলেন, 'গদবাধা বই মুখস্ত করে আমাদের চাকরির জন্য পরীক্ষা দিতে হয়, ভাইভা দিতে হয়। কিন্তু ওগুলো আমাদের চাকরির ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলছে না। হতাশা তো অবশ্যই থাকবে, যখন আমার কাছে অনেক সুযোগ থাকে কিন্তু আমি সেগুলোতে যেতে পারছি না।'
অথচ, এই মুহূর্তে শুধু তৈরি পোশাক খাতেই ৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সম্ভব বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু বাস্তবভিত্তিক শিক্ষার অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না।
বিটিএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, 'একটা ছেলে টেক্সটাইলে পাস করে, তাকে কোনো কাজে শুধুমাত্র শুরু করার জন্য যদি ঢুকিয়ে দেয়া যায়, এক সময় মে দক্ষ হয়ে যাবে। তার বদলে অন্য কাউকে ঢুকালে কিন্তু এটা কষ্টকর হয়ে যায়। চার থেকে পাঁচ লক্ষ দক্ষ কর্মসংস্থান যদি বাংলাদেশে নতুন করে সৃষ্টি করা যায় তাহলে বেকার থাকার কথা নয়।'
সরকারের সঠিক জনশক্তি পরিকল্পনার অভাবে এই সংকট তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন গবেষকরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুস সালাম বলেন, 'এটাকে বাইরের দেশেগুলো খুবই চমৎকার ভাবে ডাটাবেজ অনুসরণ করা হয়। এটাকে ইউনিভার্সিটি ইন্ডাস্ট্রি অ্যালায়েন্স।'
সংকট সমাধানে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, 'আমরা টেকনিকাল স্কুল খুলতেছি। ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল খুলতেছি। দেশে নানা সংস্থা আছে। আমরা প্রচুর অর্থ ও পদক্ষেপ ব্যয় করছি। কিন্তু এটা ভীষণ অভাব হচ্ছে, শিক্ষক নাই। এর উপরও পদক্ষেপ নিচ্ছি।'