ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলের গণরুমে এক নবীন শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার (২০ জুন) দুপুরে প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগপত্রে বলেন, “আমি লালন শাহ হলের ৩৩০ নম্বর রুমে (গণরুম) থাকি। গত সোমবার রাত ২টায় আমাকে ১৩৬ নং গণরুমে ডাকেন চারুকলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আফিফ হাসান, তন্ময় বিশ্বাস ও তার সহযোগীরা। এসময় তারা আমার উপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করে এবং আমি যৌন হয়রানির স্বীকার হই। পরে হল থেকে বের হয়ে জিয়া মোড়ে আসি। আমি হলে ঢুকার সময় হল গেটে আমাকে আফিফ ও তন্ময় মারধর করেন এবং মারতে মারতে জিয়া মোড়ে নিয়ে আসেন। এসময় আমার জামা ছিঁড়ে যায় ও চশমা ভেঙে যায়। বিচার করার কথা বলে ছাত্রলীগের রুমে নিয়ে গিয়ে সেখানেও আবার মারধর করেন।”
র্যাগিংয়ের বিষয়ে অভিযুক্ত তন্ময় বিশ্বাস বলেন, “তার সাথে একটু মনোমালিন্য হয়েছিলো। পরে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় ভাই বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছিলো। তাকে কোন মারধর করা হয়নি।”
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, “সেদিন রাতে শুনলাম হল গেটে কারা ধাক্কাধাক্কি করছে। পরে ওদেরকে ডাকলাম তারপর মিমাংসা করে দিলাম। তখন তো তারা সবাই সন্তুষ্টচিত্তেই বের হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু আজকে শুনলাম সে অভিযোগ করেছে। পরে বিকেলের দিকে ওই ছেলের সাথে আমার কথা হয়েছে, শুনলাম সে ব্যক্তি উদ্যোগে অভিযোগটি উইথড্র করে নিয়েছে।
যৌন হয়রানির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই রুমে সেদিন কি হয়েছিলো তা আমার জানা নেই। আমি পরে হল গেটে ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল এতটুকুই জানি।
এদিকে অভিযোগ টি উইথড্র করা হয়েছে কিনা জানার জন্য ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও সে ফোন রিসিভ করেনি।
তবে লিখিত অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন বলেন, ‘অভিযোগ পত্রটি আমরা হাতে পেয়েছি। তার বিষয়টি আমলেও নেয়া হয়েছে। আমরা আগামীকাল তাদেরকে অবশ্যই ডেকে কথা বলবো।’
প্রসঙ্গত, এর আগেও গত ১১ ও ১২ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে দুই দফায় এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাচ্ছুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও ফাইন আর্টস বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মীর বিরুদ্ধে। পরে গত ৪ মার্চ হাইকোর্টের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদেরকে ছাত্র-শৃঙ্খলা মিটিংয়ে সাময়িক বহিষ্কার আদেশ দেওয়া হয়৷
ডিবিসি/কেএমএল