সময় মতো মেরামত না করায় ঢাকার রাস্তার মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক লাইট ও টাইমারগুলো অকেজো পড়ে আছে।
হাতের ইশারায় চলছে রাজধানীর গাড়ি, অকেজো পড়ে আছে ট্রাফিক লাইট ও টাইমার। ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এখনো চলছে সনাতনী পদ্ধতিতে। গবেষকরা বলছেন, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন প্রকল্প নেয়ার বিষয়ে যতটা আগ্রহী, বিদ্যমান প্রকল্পগুলোর রক্ষাণাবক্ষেণে ততোটা আগ্রহী নয়। তাতে হচ্ছে সরকারি অর্থের অপচয়।
রাজধানী ঢাকার ট্রাফিক লাইট ও টাইমারগুলো এক সময় জ্বলে উঠতো, পথযাত্রীরা অপেক্ষায় থাকতো সংকেতের জন্য। এখন এসবের বালাই নেই। যেন গল্প হয়ে গেছে ঢাকার রাস্তায়।
ট্রাফিক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর ৯০ ভাগ রাস্তায় ১৮ ধরণের যানবাহন চলছে। এসব রাস্তার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বসানো 'টাইমার কাউন্টডাউন' যন্ত্র আর ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সোলার প্যানেলের সাহায্যে চালু হওয়া ট্রাফিক সিগন্যাল লাইটগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।ট্রাফিক বিভাগ বলছে, এগুলোর রক্ষাণাবক্ষেণের কাজ সিটি কর্পোরেশনের।
ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মুনিবুর রহমান বলেন, প্রথম থেকে যেহেতু এটার টেকনিক্যাল কাজ সিটি কর্পোরেশন দেখাশুনা করতো তারাই যেহেতু ব্যবস্থাপনায় ছিলেন অনেক সময় দেখা যেত একটা দুটো করে অনেকগুলো সিগ্নাল লাইট অকেজো হয়ে যেত। আমরা তখন তাদেরকে জানিয়েছি যে কোন কোন সিগনালের লাইটগুলো কাজ করছে না। তখন এগুলো দেখাশুনা এবং ঠিক করার জন্য যে লোকবল অথবা আর্থিক সহায়তা লাগতো তা হয়ত তাদের কাছে ছিল না।
এরইমধ্যে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে নতুন প্রকল্পে হাতে নিতে যাচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। গবেষকরা বলছেন, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর নতুন প্রকল্প নেয়ার বিষয়ে যতটা আগ্রহী বিদ্যমান প্রকল্পগুলোর রক্ষাণাবক্ষেণে ততোটা আগ্রহী নয়।
বুয়েটের অধ্যাপক শামসুল হক বলেন,একেকটা সোলার প্যানেল যে কত টাকা খরচ করে লাগানো হয়েছে কিন্তু সেগুলো কাজ করছে না। অযত্ন, অব্যবস্থাপনায় সেগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। সিগনাল পোস্টগুলোও মেরামতের অযোগ্য হয়ে গেছে। কেউ না কেউ এগুলোর জন্য জবাবদিহি করার দরকার ছিল কারণ এগুলো জনগণের পয়সা।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন,যদি আগে এটা কাজ না করে থাকে তাহলে আবার কেন করবো। আমি এটার পক্ষে নই। প্রকল্প আমার এখানে আসলে হয়ত আমি দুর্বল হাত তুলবো কিন্তু শক্তিশালী অনেক হাত আছে। এসব নিছকই অর্থের অপচয়।
শহরের আয়তনের তুলনায় যেখানে ২৫ শতাংশ রাস্তা থাকা দরকার, সেখানে ঢাকা শহরে রয়েছে ৭ থেকে ৮ শতাংশ। এমন শহরে আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা গড়ার আগে নতুন করে গাড়ির নিবন্ধন দেয়া বন্ধ করার পাশাপাশি রাস্তার সংখ্যা বাড়ানোর বিকল্প নেই মনে করেন গবেষকরা।