চারদিনের ভয়াবহ সংঘাতের পর অবশেষে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের মধ্যস্থতায় এই গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। এই সংঘর্ষে দুটি দেশের অন্তত ৩৬ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ২ লক্ষ ৭০ হাজারের বেশি বাসিন্দা।
এক শতাব্দীরও বেশি পুরনো সীমান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার এই দুই দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় প্রতিবেশী রাষ্ট্রে উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে। লাগাতার পাল্টাপাল্টি হামলায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল সীমান্ত এলাকা। মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন গোড়া থেকেই সংঘাত বন্ধের জোরালো আহ্বান জানিয়ে আসছিল।
সোমবার মালয়েশিয়ার পুত্রজায়ায় প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের বাসভবনে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হন থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচাইয়াচাই এবং কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের রাষ্ট্রদূতরাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর আনোয়ার ইব্রাহিম এক ঐতিহাসিক ঘোষণা দেন, দুই দেশ কোনো রকম শর্ত ছাড়াই অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, সোমবার মালয়েশিয়ার সময় দিবাগত রাত ১২টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। মঙ্গলবার দুই দেশের সামরিক বাহিনীর প্রতিনিধিরা আবারও আলোচনায় বসবেন। এছাড়া, এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শান্তি বজায় রাখার স্বার্থে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের মধ্যে নিয়মিত সরাসরি যোগাযোগ থাকবে।
উল্লেখ্য, ১৯০৭ সালে ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসকেরা থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্ত নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন, যা নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি ছিল থাইল্যান্ডের। বিষয়টি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গেলেও কোনো স্থায়ী সমাধান মেলেনি। এই সীমান্ত বিরোধের জেরেই দশকের পর দশক ধরে দুটি দেশ বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে লিপ্ত ছিল। তবে এবারের সংঘাত ছিল গত ১৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ।
ডিবিসি/এফএইচআর