অর্থনীতি, বিশেষ প্রতিবেদন

অর্থ জালিয়াতির ঘটনায় তিন বছরে ৩টি ব্রোকারেজ হাউজ বন্ধ

শামীম আহমেদ

ডিবিসি নিউজ

রবিবার ১লা আগস্ট ২০২১ ০৫:১৭:২২ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

অর্থ জালিয়াতির অভিযোগে শেয়ারবাজারের ব্রোকারেজ হাউজ বন্ধ হলে বিপাকে পড়েন বিনিয়োগকারীরাই। নগদ টাকা জমা থাকলে আটকে যায়। দীর্ঘদিনেও পাওনা নিষ্পত্তি হয় না। গেল তিন বছরে বিনিয়োগকারীর টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তিনটি ব্রোকার হাউজ এভাবে বন্ধ হয়েছে। আরো ৭টি হাউজের বিষয়ে তদন্ত চালাচ্ছে বিএসইসি।

বিনিয়োগকারীদের সমন্বিত হিসাব থেকে ৬৬ কোটি টাকা উধাও। অর্থ ও শেয়ার আত্মসাতের এই ঘটনা পুঁজিবাজারে শেয়ার লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান বানকো সিকিউরিটিজে। গেল জুনে হাউজটি বন্ধ দেয় ডিএসই। বিপাকে পড়েন সাড়ে ১১ হাজার বিনিয়োগকারী।

গত বছরের জুলাইতে ৬৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা আত্মসাতের কেলেঙ্কারি হয় ক্রেস্ট সিকিউরিটিজে। টাকা ও শেয়ার ফেরতের দাবিতে রাস্তায় নামেন এই হাউজের প্রায় ২১ হাজার বিনিয়োগকারী।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে প্রায় দুই কোটি টাকার গরমিল ধরা পড়ে আরেক ব্রোকারেজ হাউজ শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডে। পরে এই প্রতিষ্ঠানটিও বন্ধ করে দেয় ডিএসই। হাউজগুলোর এমন জালিয়াতি পুরোপুরি বন্ধ করা যাচ্ছে না, তাই তদন্ত জোরদার করেছে বিএসইসি।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, 'এটা যে কনসুলেটেড কাস্টমার অ্যাকাউন্টে হয় এটা ২ ঘণ্টার মধ্যেও ইচ্ছা করলে করা যায়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ আপনার অফিসে গিয়ে বসে থাকবে না। আপনি যদি দেখেন আপনার কাছে কাস্টমারের অনেক টাকা জমা হয়েছে এবং আপনি সে টাকা দিয়ে যদি কিছু করতে চান। এটা ঘণ্টায় ঘণ্টায় পাহারা দেয়া সম্ভব না, এটা ইন্সপেকশন টিম মাসে একবার-দুইবার গিয়ে মিলিয়ে আসে। মেইন হচ্ছে নিজের ওপর, আপনি যদি নিজে চালাকি করতে চান সেটা সাথে সাথে হয়তো ধরা যায় না। তবে এতটুকু আমরা ম্যাসেজ দিয়েছি যে এই জিনিস করে আর পার পাওয়া যাবে না।'

বিভিন্ন অভিযোগে আরো সাত ব্রোকারেজের তদন্ত চালাচ্ছে বিএসইসি। এর মধ্যে ডিএসই'র ৫টি ও সিএসই'র ২টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

বিএসইসি'র কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, 'এটার কারণ হচ্ছে আমাদের একটা কম্প্লেইন মডিউল আছে যেখানে অনলাইনে যে কেউ অভিযোগ করতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। আমরা সেগুলো এক্সপ্লোর করছি।'

ব্রোকারেজ হাউজ বন্ধ হলেও জামানতকারী ব্যাংকের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীর দাবি দ্রুত নিষ্পত্তি সম্ভব বলছেন বিশ্লেষকরা।

কোম্পানি আইন ও অর্থনীতি বিশ্লেষক ব্যারিস্টার এ এম মাসুম বলেন,' ক্লিয়ারিং ব্যংক যেগুলো ৮টির মত লিস্টেড আছে তাদেরকে দায়িত্ব দেয়া যে এই যে কাস্টমারদের টাকা তারাই সংগ্রহ করবে ও লেনদেন করবে। তাহলে ইনভেস্টরদের কনফিডেন্স অনেক গেইন করবে।'

পাওনা দাবির তথ্য যাচাই-বাছাইয়ে দেরি হলেও কারো টাকাই আটকে থাকবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন বিএসইসি প্রধান। শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম আরো বলেন, 'কিন্ত কোন নির্দিষ্ট ক্লায়েন্টের যদি সমস্যা হয় যেটা টাকা নিয়ে সমস্যা এটা তো আমাদের দেখেশুনে দিতে হয়। কারণ এখানে দুইটা সমস্যা। অনেক সময় অভিযোগকারী মিথ্যে বলে, অনেক সময় কোম্পানি মিথ্যে অভিযোগ তোলে। যাচাই-বাছাই করা লাগে তাই সময় লাগে। এখানে একপক্ষে না দুইপক্ষেও সমস্যা পেয়েছি।'

গেল মে ও জুনে নতুন ৪৬টি ব্রোকার হাউজের অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি। এতে ডিএসইর সদস্যভুক্ত মোট হাউজের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯৬টি।

আরও পড়ুন