বর্ণাঢ্য এক রাজনৈতিক জীবন তার। মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে ছিল তার সরব উপস্থিতি। শামিল ছিলেন বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যার প্রতিবাদেও।
প্রতিষ্ঠা করেন আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ। দেশের প্রথম নারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার কৃতিত্বও তার। দায়িত্ব পালন করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবেও। আজীবন লালন করেছেন বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ।
সাহার খাতুনের জন্ম ১৯৪৩ সালের ১লা মার্চ ঢাকার কুর্মিটোলায়। রাজনীতির শুরু স্কুল থেকেই। ১৯৬১ সালে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে। আইন ছাত্রদের মধ্যে একটি নির্বাচনে তিনি ছাত্রলীগ সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে জয় লাভ করেন।
১৯৬৯ সালে গঠিত বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চ ভাষনের সময় সশরীরে ছিলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। ভুমিকা রাখেন মহান মুক্তিযুদ্ধে।
আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও রাজনীতিতে আরো বেশী সক্রিয় হন সাহারা খাতুন। আইনজীবীদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ।
বঙ্গবন্ধুর হত্যা পর আওয়ামী লীগের সঙ্গে বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে সাহারা খাতুনকেও। কিন্তু কখনই বিচ্যুত হননি আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় শেখ হাসিনা গ্রেফতার হলে অনেকটা ছায়ার মতো অনুসরণ করেন দলীয় প্রধানকে। আইনী লড়াই চালান মুক্তির আগ পর্যন্ত।
২০০৮ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাহারা খাতুন। দায়িত্ব পালন করেন দেশের প্রথম নারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে।
পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সাহারা খাতুন। ২০১৪ সালের দশম সংসদ এবং ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
তৃণমুল ও রাজপথ থেকে উঠে আসা সাহারা খাতুন ছিলেন অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদক ও সহ-সভাপতি। পরে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আইন সম্পাদক সবশেষ দলের সবোর্চ্চ নীতি নির্ধারনী ফোরাম সভাপতিমন্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ফিন্যান্স কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে কাজ করছেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাথে, পরবর্তীতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন।
আন্তর্জাতিক মহিলা আইনজীবী সমিতি ও আন্তর্জাতিক মহিলা জোটের সদস্যও ছিলেন সাহারা খাতুন। ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত সাহারা খাতুনের পরিচিত ছিল ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ হিসাবে।