আন্তর্জাতিক, বিনোদন

অ্যাডলফ হিটলারের জন্মদিন আজ

সামান্তা সাইদ খান

ডিবিসি নিউজ

বুধবার ২০শে এপ্রিল ২০২২ ০৬:৫৬:৩০ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

সাবেক জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাডলফ হিটলার। অস্ট্রীয় বংশোদ্ভূত জার্মান রাজনীতিবিদ তিনি। পরবর্তীতে ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জার্মানির চ্যান্সেলর এবং ১৯৩৪ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সে দেশের ফিউরার ছিলেন। হিটলার প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সৈনিক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে তিনিই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নেতৃত্ব দেন।

১৮৮৯ সালের আজকের এই দিনে তথা ২০ এপ্রিল পৃথিবীর ইতিহাসের এক অন্যতম কিংবদন্তীতুল্য রাষ্ট্রনায়ক এডলফ হিটলার ধরায় আবির্ভূত হন।অর্থাৎ আজ তার ১৩৩ তম জন্মদিন।কারো চোখে তিনি ছিলেন এক ভয়ঙ্কর ত্রাস আর কারো চোখে মহানায়ক। তিনি ছিলেন ২য় বিশ্বযুদ্ধের এক অদম্য অমায়িক শক্তি।

এই এপ্রিল মাসেই ১৯৪৫ সালে তিনি যুদ্ধকালীন সময়ে আত্নহত্যা করেন।যদিও তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।যাইহোক সে সময় উনার আত্মহত্যা করার পূর্বে বার্লিন রেডিওতে এই ভাষণ প্রচারিত হয়।সেখানে তিনি বলেন:-

“নিজস্ব সম্পত্তি বলতে আমার যা কিছু আছে তারমালিক হবে নাৎসি পার্টি।পার্টির অস্তিত্ব যদি বিলুপ্ত হয়,তবে জার্মান রাষ্ট্রই হবে সে এসব কিছুর অধিকারী।আর রাষ্ট্রই যদি না থাকে তবে আমার আর বলার কিছু নেই।জার্মানীর শাষন-ক্ষমতা যার হাতেই আসুক না কেন,আমি তাকে একটা অনুরোধ করবো।যুগযুগ ধরে আমি যেসব চিত্র সংগ্রহ করেছি,যক্ষের ধনের মত যেসব শিল্পকলা সংরক্ষণ করেছি,তার পিছনে একটা বিশেষ উদ্দেশ্য কাজ করেছিল।আমি চেয়েছিলাম, দানিয়ুব নদীর তীরে আমার জন্মভূমি লিনৎসে একটা গ্যালারী স্থাপন করবো।আমার মনের সেই সুপ্ত বাসনা সুপ্তই থেকে গেছে। বাস্তবায়িত করার অবকাশ আমি পাইনি। আমি যা পারিনি মৃত্যুর দুয়ারে দাঁড়িয়ে অনাগত শাসকের কাছে সবিনয়ে অনুরোধ করবো,তারা যেন আমার সে সাধ পূরণ করেন।
.
আগামীতে অনেকেই হয়তো আমাকে ২য় বিশ্বযুদ্ধের খলনায়ক হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করবে।সকল দোষ চাপাবে আমার ঘাড়ে।তখন আমার পক্ষ থেকে জবাব দেবার কেউ থাকবে না।তাই মৃত্যুর আগে আমি স্পষ্টভাবে বলব যে,আমরা জার্মানবাসীরা যুদ্ধ চাইনি।ওটা আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল, আমরা চেয়েছিলাম,প্রথম মহাযুদ্ধের গ্লানি কাটিয়ে উঠতে।একটা আত্নমর্যাদসম্পন্ন জাতি হিসেবে পৃথিবীতে আমরা চেয়েছিলাম,আমাদের জাতীয় অবমাননার দলিল “ভার্সাই চুক্তি” বাতিল করতে। গ্রেট ব্রিটেন আর ফ্রান্সকে বন্ধুহিসেবে গ্রহন করতে।কিন্তু ইহুদি বংশসম্ভূত না হওয়া সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কতিপয় রাষ্ট্রনায়ক ইহুদিদের স্বার্থরক্ষার জন্যে আমাদের উসকানি দিয়েছিলেন মারাত্নক পথে ধাবিত হতে।বৃহৎ শক্তিগুলোর প্রতি অনুরোধ করেছি অস্ত্র সীমিতকরণ চুক্তি সম্পাদন করতে।কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি।অথচ আমি জানি,সকল দোষ চাপানো হবে আমার ঘাড়ে।

১ম বিশ্বযুদ্ধের বিভীষিকার পর ইংল্যান্ড এবং আমেরিকার বিরুদ্ধে ২য় বার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার সে শক্তি সত্যিই কি আমাদের ছিল.? তবু যখন যুদ্ধ বেধেঁই গেছে,দ্বিতীয় মাহাযুদ্ধের খলনায়ক যখন আমাকে হতেই হয়েছে,তখন আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করেছি জাতীয় মর্যাদা রক্ষা করার জন্য। বিলাসব্যসনকে দূরে সরিয়ে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছি জয়লাভে। কিন্তু বেইমান ইহুদিজাতির আন্তর্জাতিক বিশ্বাসঘাতকতা আমাদের সফল হতে দেয়নি। এই ধ্বংসপ্রাপ্ত বার্লিন নগরী ও পরাজিত জার্মানীর যারা এরপরও বেচেঁ থাকবে,নিশ্চয় তারা ইহুদীবাদ ও তাদের সহযোগীদের অভিসম্পাত দান করবে, মনে মনে ঘৃণা করবে। কারণ আমাদের জাতির এই অভাবিত পরাজয়ের জন্য তারাই দায়ী। বিগত ছয়টি বছরের যুদ্ধে সবকয়টি সেক্টরেই আমরা পরাজিত হইনি। জয়লাভ করেছি প্রায় সর্বত্র। কিন্তু যখন আমরা পরাজিত হলাম তখনই সব শেষ হয়ে যাচ্ছে না। ইতিহাস নিশ্চয়ই আমাদের পরাজিত জাতি হিসেবে বেঁচে থাকার গৌরবময় ও বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের কথা লেখা থাকবে। আত্নরক্ষার জন্য বার্লিন ছেড়ে অনত্র্য সরে যেতে অনেকে আমাকে উপদেশ দিচ্ছে। কিন্তু ইতিহাস সৃষ্টিকারী আমার প্রিয় বার্লিন শহর ছেড়ে আমি আত্নরক্ষা করতে পারি। আমি নিশ্চিত যে,শত্রু বাহিনীর প্রচন্ড আক্রমণ প্রতিহত করার ক্ষমতা আমদের নেই। তাদের মারাত্নক স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের সাংঘাতিক আঘাতে বার্লিন শহরের বিশাল বিশাল ইমারত ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। নগরের অভ্যন্তরে আটকা পরে হাজার নিরীহ নর- নারী, শিশু-বৃদ্ধ, যুবক-যুবতী মৃত্যুবরণ করবে। তবু আমি আত্নসমার্পণ করতে কিংবা প্রাণরক্ষা জন্যে পালাতে চাইনা। আমি চিরদিন তাদের ভাগ্যের সাথে নিজের ভাগ্যকে জড়িয়ে রেখেছি আজও তাই করতে চাই।মরতে হয় সবাই একসাথে মরবো।একাকী পালাবো না। সত্যিই যদি শেষ পর্যন্ত বার্লিনের পতন হয়েই যায় এবং আমার আস্তানা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে, তখন আমি সেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করবো। নিজের মাথায় গুলি চালাবো,তবু বার্লিন নগরী পরিত্যাগ করবো না।''

 অস্ট্রীয় বংশোদ্ভূত জার্মান রাজনীতিবিদ যিনি ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। হিটলার ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জার্মানির চ্যান্সেলর এবং ১৯৩৪ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সে দেশের ফিউরার ছিলেন।
 বৈবাহিক জীবন মাত্র ২৪ ঘন্টা। স্ত্রীঃ ইভা ব্রাউন
 বিশ্বের সেরা ১০০ জন মনীষীর তালিকায় যার স্থান ৩৯ তম। যিনি পরাজিত হয়েছেন তবে মাথা নত করেননি। 


আরও পড়ুন