শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনিরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সোমবার (৩ জুলাই) এ সাময়িক বরখাস্তের কথা জানানো হয়। পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানসহ তার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে ৭২ লাখ টাকার চেক লিখে নেওয়ার অভিযোগ ছিল।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনিরের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এ জন্য সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ধারা ৩৯(১) এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ১২(১) অনুযায়ী অভিযুক্তকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা সমীচীন বিবেচিত হয়।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, রাসেল মনির বাংলাদেশ সার্ভিস রুল (বিএসআর) পার্ট-১ বিধি ৭১ অনুযায়ী খোরপোষ পাবেন। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়েছে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনিরের বরখাস্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে জানান, আমি কিছু জানি না, আর এমন কোনো চিঠি আমি পাইনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার সাইফুল হককে একাধিকবার ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা সূত্র জানায়, জাজিরার আহাদী বয়াতিকান্দি গ্রামের শাহীন আলম শেখ নামের এক ব্যক্তি ও তার সহযোগী ছোট কৃষ্ণনগর গ্রামের সেকান্দার মাদবরের কাছ থেকে ২১ মে ১৭ হাজার ডলার, কিছু টাকা ও মুঠোফোন ছিনতাই হয়। ২১ লাখ ১৫ হাজার ২৫০ টাকা খোয়া গেছে—এমন অভিযোগ এনে ৯ ব্যক্তিকে আসামি করে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় মামলা করেন শাহীন আলম। মামলায় চার যুবক ২৯ মে উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন পান। তা সত্ত্বেও ঢাকার কেরানীগঞ্জের একটি বাসায় ওই চার যুবককে আটকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোস্তাফিজুর রহমান নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ।
এ বিষয়ে শরীয়তপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল ইমরান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন।
উচ্চ আদালতের জামিন সত্ত্বেও দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে শরীয়তপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। আইনজীবী মোহাম্মদ মুজিবুর রহমানের আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের বেঞ্চ মঙ্গলবার (১৩ জুন) এ আদেশ দেন। আগামী ১৬ জুলাই তাদের আদালতে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে পুলিশের মহাপরিদর্শক ও শরীয়তপুরের পুলিশ সুপারকে ওই ঘটনায় নেওয়া পদক্ষেপ ও নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে।
ডিবিসি/আরপিকে