বাংলাদেশ, জাতীয়

আগামী নির্বাচনে নৌকার জন্য ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

হ্যাপী মাহমুদ

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ২৪শে নভেম্বর ২০২২ ০৬:২৬:১০ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কার জন্য যশোর বাসীর কাছে ভোট চাইলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


সরকারপ্রধান আরও বলেন, আপনারা নৌকা মার্কা ভোট দিয়ে আমাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। আগামীতে নৌকা মার্কা ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন কি না ওয়াদা চাই। আপনারা হাত তুলে ওয়াদা করেন। 

আজ বৃহস্পতিবার (২৪শে নভেম্বর) যশোর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় তিনি এ কথা বলেন। এর আগে দুপুর ২টা ৩৮ মিনিটে যশোর শামস-উল হুদা স্টেডিয়ামে জনসভা মঞ্চে আসেন প্রধানমন্ত্রী। মঞ্চে উঠে তিনি হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানান। এ সময় উচ্ছ্বসিত নেতাকর্মীরা নানা স্লোগান দেন। 

যশোরবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই যশোরের স্টেডিয়ামে মিটিং করে গেলাম। এই স্টেডিয়াম জরাজীর্ণ-ঝুঁকিপূর্ণ। এই স্টেডিয়ামকে আমরা উন্নত করে দেব। এই গ্যালারি ভেঙে নতুন আধুনিক ১১ স্তরবিশিষ্ট গ্যালারি তৈরি করে দেব।’ 

এ ক্ষেত্রে ছাত্র-যুব সমাজের প্রতি একটি কথা আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চা এবং লেখাপড়া করতে হবে। করবে তো সবাই? মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে। মাদক নেওয়া চলবে না, যেটা একজন মানুষের জীবন শেষ করে দেয়। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস থেকে দূরে থাকতে হবে, কেউ তাতে লিপ্ত হতে পারবে না। আমরা শান্তি চাই, উন্নতি চাই। আমাদের যুব সমাজ ভবিষ্যৎ, তারাই এদেশের ছেলে-মেয়ে। সবাই মিলে এই দেশকে গড়ে তুলতে হবে। এই দেশের উন্নতি করতে হবে, সেই কথা মনে রাখতে হবে।’ 

জেলা স্টেডিয়াম আধুনিক করার জন্য ইতিমধ্যে ৩২ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা উন্নত হয়ে যাবে। প্রত্যেকটি জায়গায় আমি চাই, আমাদের দেশের মানুষের উন্নতি হোক।’ 

উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘গুজবে কখনো কান দেবেন না। বিএনপির কাজই হচ্ছে সব সময় গুজব ছড়ানো। ওরা নিজেরাতো কিছু করতে পারে না। ক্ষমতায় যখনই এসেছে, লুটপাট করে খেয়েছে।’ 

রিজার্ভের টাকা সরকার জনগণের কল্যাণে ব্যয় করেছে জানান প্রধানমন্ত্রী। করোনা টিকা, চাল, সার, গম, ভুট্টাসহ প্রয়োজনীয় পণ্য কেনা হয়েছে বলে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, আমরা জনগণের জন্য দুই হাতে খরচ করেছি। এটা অন্য কোথাও যায়নি, জনগণের কল্যাণে ব্যয় হয়েছে। এখন রাস্তাঘাট, পুল, ব্রিজ থেকে শুরু করে অনেক কাজ করে দিচ্ছি।

মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ ডলার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সময় ছিল ৩৫৩ মার্কিন ডলার। কোথায় ৩০০! আর কোথায় ২ হাজার ৮২৪। এরা কার কাছে প্রশ্ন করে। খুন করা, হত্যা করা অত্যাচার করা, নির্যাতন করা, জেল, জুলুম-মামলা ছাড়া তারা কিছুই দিতে পারে নাই।’

যশোরের সঙ্গে নাড়ির টান আছে বলে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যশোরে আমার একটা নাড়ির টান আছে। আমার নানা শেখ জহুরুল হক এই যশোরে চাকরি করতেন। আমার মায়ের বয়স যখন তিন বছর ছিল তখন তিনি মারা যান। ওই সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা এতই খারাপ ছিল, যে কারণে লাশ টুঙ্গিপাড়ায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। এই যশোরেই তাকে মাটি দেওয়া হয়েছিল। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিচার পাওয়ার অধিকার আমার ছিল না। বাবা-মা ভাই-বোন সবাইকে হারিয়েছি। তারপরও এই বাংলায় ফিরে এসেছি। বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই ছিল আমার লক্ষ্য। 

এসময় মঞ্চে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, সম্পাদক মন্ডলী সদস্য ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সামছুন্নাহার চাপা, কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, সাহাবুদ্দিন ফরাজী, ইকবাল হোসেন অপু, আনিসুর রহমান, মেরিনা জাহান কবিতা ও পারভিন জামান কল্পনা।

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের পরিচালনায় জনসভায় বক্তব্য রাখেন বাগেরহাট-১ (চিতলমারী, মোল্লাহাট, ফকিরহাট) আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিনসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

আরও পড়ুন