আজ ২৩শে জুলাই, বিশ্ব সাহিত্যের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম, উইলিয়াম শেক্সপিয়রের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী। ১৫৬৪ সালের এই দিনে তিনি ইংল্যান্ডের স্ট্রাটফোর্ড-আপন-অ্যাভনে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৬১৬ সালের ঠিক এই দিনেই তিনি চিরবিদায় নেন। তাঁর নাটক ও সনেট আজও বিশ্বজুড়ে পঠিত, মঞ্চস্থ এবং সাহিত্যপ্রেমীদের অনুপ্রেরণার উৎস।
শেক্সপিয়রকে প্রায়শই ‘বার্ড অফ অ্যাভন’ (Bard of Avon) বা ইংল্যান্ডের জাতীয় কবি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তাঁর রচনা ইংরেজি ভাষা এবং বিশ্ব সাহিত্যকে যে উচ্চতায় নিয়ে গেছে, তা সত্যিই বিরল। তাঁর লেখনী শক্তি মানব মনের জটিলতা এবং আবেগকে এমনভাবে তুলে ধরেছে, যা আজও প্রাসঙ্গিক। তাঁর সৃষ্ট চরিত্রগুলি যেমন: হ্যামলেট, ওথেলো, কিং লিয়ার, ম্যাকবেথ, রোমিও ও জুলিয়েট সাহিত্যপ্রেমীদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী আসন করে নিয়েছে।
শেক্সপিয়রের সাহিত্যকর্মকে মূলত ট্র্যাজেডি, কমেডি এবং ঐতিহাসিক নাটক এই তিন ভাগে ভাগ করা হয়। তাঁর ট্র্যাজেডিগুলি মানব জীবনের দুঃখ, সংঘাত এবং নিয়তির এক নিষ্ঠুর চিত্র তুলে ধরে। হ্যামলেট, ওথেলো, কিং লিয়ার, ম্যাকবেথ এবং রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত ট্র্যাজেডিগুলির মধ্যে অন্যতম। হাসির ছলে জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে তাঁর কমেডিগুলিতে, যার মধ্যে আ মিডসামার নাইট'স ড্রিম, দ্য মার্চেন্ট অফ ভেনিস, অ্যাজ ইউ লাইক ইট এবং টুয়েলফথ নাইট অন্যতম। ইংল্যান্ডের ইতিহাস নিয়ে লেখা তাঁর নাটকগুলিও বেশ প্রসিদ্ধ, যেমন- হেনরি চতুর্থ এবং রিচার্ড তৃতীয়। নাটকের পাশাপাশি তাঁর ১৫৪টি সনেটও ইংরেজি সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।
শেক্সপিয়রের প্রভাব কেবল সাহিত্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তাঁর ভাষার ব্যবহার, চরিত্রায়ণ এবং গল্পের বুনন আধুনিক চলচ্চিত্র, সঙ্গীত, চিত্রকলা এবং মঞ্চনাটকেও গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে। তাঁর রচিত বহু শব্দবন্ধ ও প্রবাদ বাক্য এখন ইংরেজি ভাষার অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রতি বছর এই দিনে সারা বিশ্বের সাহিত্যিক, গবেষক এবং সাধারণ মানুষ বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে এই মহান কবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আজকের দিনে শেক্সপিয়রকে স্মরণ করা মানে শুধু একজন কবির জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী পালন নয়, বরং মানবজাতির সৃষ্টিশীলতার এক অপার ক্ষমতাকে উদযাপন করা। তাঁর রচনা আজও আমাদের হাসায়, কাঁদায়, ভাবায় এবং জীবনের গভীর অর্থ খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
ডিবিসি/এনএসএফ