আজ ১লা সেপ্টেম্বর (রবিবার)। বিশ্ব চিঠি দিবস। একসময় মনের ভাব, আবেগ, না বলা সব জমানো কথা সুবিন্যস্ত আকারে যত্ন করে চিঠিতে করেই লিখতে হত প্রিয়জনকে। তবে প্রযুক্তির আশির্বাদে মানুষের মনের ভাবের প্রতিচ্ছবি চিঠির জায়গা দখলে নিয়েছে মেসেঞ্জার, ইমেইল, হোয়াটসঅ্যাপসহ নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। তবে এখনও দাপ্তরিক কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে চিঠি।
আজকের চিঠি দিবসের দিনে চিঠি লিখতে পারেন প্রিয়জনকে কিংবা যে কাউকে। আজ লাল নীল পাতায় বাহারি রঙে মনের না বলা কথা জানিয়ে রঙিন খামে চিঠি লিখতে পারেন। যার শুরুতে স্নেহময় এবং শেষে থাকবে ইতি তোমারই। শুধু প্রেয়সী কিংবা প্রিয়তম একে অপরকে নয়; বাবাকে যে আপনি ভালোবাসেন, সে কথা হয়তো মুখে কখনো বলতেই পারেননি, চিঠিতে বাবাকে জানাতে পারেন সে কথা। মাকেও চিঠি লিখতে পারেন আজ। পুরোনো কোনো এক বন্ধু, যে আপনার ছেলেবেলা জুড়ে আছে, এখন হয়তো যার সাথে বেশি যোগাযোগ নেই, তাকেও চিঠি লিখতে পারেন। সংসার জীবনের অনেক দিন পার করে যাদের ভেতরে খুব এখন আর রোমান্টিকতা নেই, তারাও আজ একে অপরকে মমতায় ভরা চিঠি লিখতে পারেন।
চিঠি শুধু প্রেম নয়, সব ধরনের যোগাযোগেরই মাধ্যম ছিল। কোনো এক বেকারের চাকরির খবর, বিদেশে থাকা ছেলের মায়ের কাছে চিঠি কিংবা দেশ হতে বিদেশে ছেলের জন্য মায়ের লেখা চিঠি। কোনো এক মৃত্যুর চিঠি আবার পরিবারে বয়ে আনত স্থবিরতা। শুধু দূরে কিংবা অদেখা মানুষকেই মানুষ চিঠি লিখত না, যার সঙ্গে প্রায়ই দেখা হয় কিংবা প্রতিদিন দেখা করা প্রেমিক প্রেমিকাও একে অপরকে চিঠি লিখত। কারণ, চিঠিতে যত সুন্দর ভাষায় মনের অনুভূতি গুছিয়ে প্রকাশ করা যায়, মুখে ততটা বলা হয়ে ওঠে না৷ শুভেচ্ছা বার্তা, খোঁজখবর নেওয়া, টাকা পাঠানো, চাকরির যোগদানপত্র সবই এক সময় আসত চিঠির মাধ্যমে। আগের মতো আর বাড়িগুলোর গেটে দেখা মেলে না চিঠির বাক্সের। প্রেয়সীর কাছে সুগন্ধী মেখে চিঠি লিখত প্রেমিক, এমন কথা অনেকেই হয়ত শুনেছেন। এসব বানোয়াট কোনো গল্প নয়, একেবারেই সত্যি।
কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ লিখেছিলেন, ‘ভালো আছি ভালো থেকো আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া থেকে চিঠিকে বাঁচিয়ে রাখতে আপনিও লিখুন- আকাশের ঠিকানায় কিংবা মনের ঠিকানায়।
ডিবিসি/এএনটি