আজ ২১শে নভেম্বর, বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব টেলিভিশন দিবস। তথ্য, শিক্ষা ও বিনোদনের অন্যতম প্রধান এই মাধ্যমটির গুরুত্বকে স্মরণ করে প্রতি বছর এই দিনটিকে বিশেষভাবে উদযাপন করা হয়।
টেলিভিশন শুধু একটি যন্ত্র নয়, এটি বিশ্বকে মানুষের ঘরের মধ্যে নিয়ে আসার এক বিস্ময়কর আবিষ্কার। প্রযুক্তির বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এর রূপ পরিবর্তিত হলেও, আধুনিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে এর প্রাসঙ্গিকতা আজও অটুট।
যদিও প্রথম বৈদ্যুতিক টেলিভিশন ১৯২৭ সালে আমেরিকান বিজ্ঞানী ফিলো টেলর ফার্নসওয়ার্থ তৈরি করেন, তবে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী জন লগি বেয়ার্ড ১৯২৬ সালে প্রথম কার্যকরী টেলিভিশন উদ্ভাবন করেন। তাঁর এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই দিনটি বেছে নেওয়া হয়।
মানব জীবনে টেলিভিশনের ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব এবং এর প্রসারকে স্বীকৃতি জানাতে ১৯৯৬ সালের ২১ ও ২২শে নভেম্বর জাতিসংঘ আয়োজিত প্রথম 'বিশ্ব টেলিভিশন ফোরামের' পর সেই বছরই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২১ নভেম্বরকে 'বিশ্ব টেলিভিশন দিবস' হিসেবে ঘোষণা করে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে টেলিভিশন অনেক উন্নয়ন এবং উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। একসময় সাদা-কালো থেকে রঙিন, তারপর এইচডি ও স্মার্ট প্রযুক্তির আগমন ঘটেছে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ও স্মার্টফোনের দাপট সত্ত্বেও বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে এটি এখনো খবর, খেলা এবং বিনোদনের অন্যতম প্রধান উৎস।
টেলিভিশন দ্রুততম সময়ে বিশ্বব্যাপী খবর পৌঁছে দিয়ে মানুষকে সচেতন করে তোলে। বিভিন্ন শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান, প্রামাণ্যচিত্র এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রচারের মাধ্যমে এটি মানুষের জ্ঞান ও চিন্তাধারাকে সমৃদ্ধ করে। সিনেমা, নাটক, এবং বিভিন্ন শো প্রচারের মাধ্যমে এটি পরিবারের অবসর বিনোদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি একই সঙ্গে লক্ষ লক্ষ মানুষকে একটি নির্দিষ্ট ইভেন্ট দেখার সুযোগ দিয়ে সামাজিক ঐক্য তৈরি করে।
বাংলাদেশে ১৯৬৪ সালের ২৫শে ডিসেম্বর সাদা-কালো সম্প্রচারের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। এরপর ১৯৮০ সাল থেকে শুরু হয় রঙিন সম্প্রচার। বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে দেশে একাধিক টিভি চ্যানেল কার্যকর রয়েছে, যা দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং গণমাধ্যমকে সমৃদ্ধ করছে।
বিশ্ব টেলিভিশন দিবসে এর স্রষ্টাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং এই মাধ্যমটি কীভাবে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখছে, সে বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো হয়।
ডিবিসি/এনএসএফ