আজ ৩ ডিসেম্বর ‘বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস’। ১৯৯২ সাল থেকে জাতিসংঘ ঘোষিত এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি, মর্যাদা সমুন্নত রাখা এবং অধিকার সুরক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয়।
প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে সমাজে এখনও স্বচ্ছ ধারণার অভাব রয়েছে। অনেকে একে কেবল শারীরিক অসম্পূর্ণতা মনে করলেও বাস্তবে এটি মানসিক, বুদ্ধিবৃত্তীয়, দৃষ্টি, বাক ও শ্রবণজনিত কিংবা বহুমাত্রিক হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৫-১৬ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধিতার শিকার। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) ও বি-স্ক্যান-এর জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতিবন্ধিতার হার ৮ শতাংশ; যার মধ্যে পুরুষ ৭ শতাংশ এবং নারী প্রায় ৯ শতাংশ।
বাংলাদেশের সংবিধান এবং ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩’-এ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান, ভৌত অবকাঠামো ব্যবহার এবং শ্রমবাজারে প্রবেশাধিকারসহ সর্বক্ষেত্রে সমান সুযোগের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। তবে আইনি সুরক্ষা থাকলেও বাস্তব চিত্র অনেকটাই ভিন্ন। জাতীয় প্রতিবন্ধী ব্যক্তি জরিপ (এনএসপিডি) ২০২১-এর তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৬০ শতাংশ প্রতিবন্ধী শিশু এখনও আনুষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে। প্রাথমিকে ৬৫ শতাংশ ও মাধ্যমিকে ৩৫ শতাংশ শিশু নথিভুক্ত হলেও, গুণগত শিক্ষার অভাবে তারা পিছিয়ে পড়ছে।
শিক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তিতেও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা চরম ভোগান্তির শিকার। বিশেষ করে গ্রামীণ জনপদে ফিজিওথেরাপি, স্পিচথেরাপি বা মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া অত্যন্ত কঠিন ও ব্যয়বহুল। সরকারি হাসপাতালগুলোতেও তাদের জন্য বিশেষায়িত সেবার অভাব রয়েছে। এছাড়া সমাজে প্রতিবন্ধকতাকে এখনও ‘অভিশাপ’ বা ‘বোঝা’ হিসেবে দেখার নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তাদের সামাজিক অন্তর্ভুক্তিতে বড় বাধা সৃষ্টি করছে।
ডিবিসি/আরএসএল