বাংলাদেশ, জাতীয়, নারী

বেগম রোকেয়া দিবস আজ

ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ৯ই ডিসেম্বর ২০২৩ ০৩:০৯:১৭ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

আজ বেগম রোকেয়া দিবস। নারী জাগরণ ও অধিকার আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ১৪২তম জন্ম ও ৯০তম মৃত্যু দিবস। মহীয়সী এ নারী ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩২ সালের এই দিনে তিনি মারা যান।

মুক্তচিন্তা, ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি এবং শাণিত লেখনীর মধ্য দিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ শতকের একজন বিরল ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছেন। বাঙালি মুসলমান সমাজে নারী স্বাধীনতার পক্ষে প্রথম প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর বেগম রোকেয়া। বিশ শতকের প্রথম দিকে বাঙালি মুসলমানদের নবজাগরণের সূচনালগ্নে নারীশিক্ষা ও নারী জাগরণে তিনিই প্রধান নেতৃত্ব দেন। বেগম রোকেয়াই প্রথমবারের মতো বাঙালি মুসলিম সমাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীর সমান অধিকারের দাবি তুলে ধরেন এবং নারী স্বাধীনতার পক্ষে নিজের মতবাদ প্রচার করেন।

অত্যন্ত প্রতিকূল সামাজিক পরিবেশে তিনি নিজের পড়াশোনাকে এগিয়ে নেন। ১৯০৯ সালে তিনি ভাগলপুরে ‘সাখাওয়াৎ মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল’ নামে একটি স্কুল স্থাপন করেন। কিন্তু পারিবারিক কারণে রোকেয়া ভাগলপুর ছেড়ে কলকাতায় এসে বসবাস শুরু করেন। রোকেয়ার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ১৯১৭ সালে এই স্কুল মধ্য ইংরেজি গার্লস স্কুলে এবং ১৯৩১ সালে উচ্চ ইংরেজি গার্লস স্কুলে রূপান্তরিত হয়।

তার জীবনে শিক্ষালাভ ও মূল্যবোধ গঠনে তার ভাই ও বড় বোন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন। সে সময় মুসলিম সমাজে মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর কোনো চল ছিল না। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও পরিবারের সবার অগোচরে তার বড় ভাইয়ের কাছে উর্দু, বাংলা, আরবি ও ফারসি পড়তে এবং লিখতে শেখেন। পরবর্তীতে,  বিহারের ভাগলপুরে সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয়। স্বামীর উৎসাহে ও নিজের আগ্রহে তিনি লেখাপড়ার প্রসার ঘটান।

তার উলে­খযোগ্য রচনার মধ্যে রয়েছে: মতিচূর, সুলতানার স্বপ্ন, পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী প্রভৃতি। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া বেঁচে ছিলেন মাত্র বায়ান্ন বছর।

মহিলা ও শিশু  বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বেগম রোকেয়া দিবস ও বেগম রোকেয়া পদক ২০২৩ প্রদান উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। নারী জাগরণে উদ্বুদ্ধকরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রাখায় এ বছর পাঁচ জন বিশিষ্ট নারীকে বেগম রোকেয়া পদক দেওয়া হচ্ছে। পদকপ্রাপ্তরা হলেন—নারী শিক্ষায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপাচার্য খালেদা একরাম, মরণোত্তর (ঢাকা জেলা); নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় ডা. হালিদা হানুম আখতার (রংপুর জেলা); নারীর আর্থসামাজিক উন্নয়নে কামরুন্নেছা আশরাফ দিনা, মরণোত্তর (নেত্রকোনা জেলা); নারী জাগরণে উদ্বুদ্ধকরণে নিশাত মজুমদার (লক্ষ্মীপুর জেলা) এবং পল্লি উন্নয়নে রনিতা বালা (ঠাকুরগাঁও জেলা)।

প্রতিবছর ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস পালন করা হয়। বেগম রোকেয়া নারী জাগরণের শুধু স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন না বরং তার স্বপ্ন-সাধনা, লালিত বোধ-বিশ্বাস ও আদর্শকে বাস্তবে রূপায়ণের জন্য স্বীয় সমাজে বহুমাত্রিক কর্মযজ্ঞের আয়োজনও করেছিলেন। তার কর্মকাণ্ড শুধু মুসলিম নারী নয় বাংলার সব নারী জাগরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আজ রোকেয়া নেই। তার কর্ম রয়েছে।

আরও পড়ুন