অন্তর্বর্তী সরকারের নয় মাসে রাজধানী যেন পরিণত হয়েছে আন্দোলনের নগরে। ছুটির দিন, কর্ম দিবস কোনো বাছবিচার নেই। প্রায় প্রতিদিনই একাধিক আন্দোলন, সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ হচ্ছে। যানজটের এই নগরী নিত্য আন্দোলনের কারণে হয়ে উঠছে আরো বিভীষিকাময়।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সরকারের ৯ মাসে রাজধানীতে প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে তিনটি, আর মোট আন্দোলন হয়েছে সাড়ে পাঁচশর বেশি।
অভ্যুত্থানের মুখে ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের কাছে দাবি আদায়ে সরব হয়ে উঠে ছাত্র, শিক্ষক, পেশাজীবীসহ সব শ্রেণির মানুষ। দিনে দিনে এভাবে ঢাকা হয়ে উঠছে আন্দোলনের নগর। যেখানে কথায় কথায় চলে সড়ক অবরোধ-বিক্ষোভ।
আন্দোলনের প্রধান পয়েন্ট হয়ে উঠেছে শাহবাগ মোড়। এছাড়া টিএসসি, কাকরাইল, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার আশপাশের এলাকা, মহাখালী রেলগেট অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু। বাদ নেই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের তোপখানা সড়ক এবং সচিবালয় গেট প্রাঙ্গন। বোনাস হিসেবে ঢাকা ও সিটি কলেজের সংঘর্ষ তো আছেই। এছাড়া প্রায় পুরো নগরজুড়েই কোথাও না কোথাও প্রতিদিনই হচ্ছে নানা আন্দোলন। এর ফলে মূল সড়ক ছাপিয়ে তীব্র যানজট ছড়িয়ে পড়ছে অলিগলিতেও।
অধিকার আদায়ের দাবিতে গড়ে উঠা আন্দোলনে প্রতিদিন ভুলুণ্ঠিত হচ্ছে আরও হাজারো মানুষের অধিকার। সীমাহীন ভোগান্তি হয়ে উঠছে নগরবাসীর জীবনের অনুষঙ্গ।
প্রায় প্রতিদিনের আন্দোলনে দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে খেটে খাওয়া মানুষের জীবন। দিনের পর দিন শাহবাগে সড়ক অবরোধে ফুল নষ্ট হয়ে ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা। বিপাকে ক্ষুদ্র দোকানিরাও। সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনের অন্যতম ভুক্তভোগী অফিসগামী মানুষ ও শিক্ষার্থী।
গুরুতর রোগী বহন করা অ্যাম্বুলেন্সও অনেক সময় আটকা পড়ে সড়ক অবরোধে। এতে দেখা দেয় জীবন বিপন্ন হওয়ার শঙ্কাও।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে তিনটি আন্দোলন হয় এই নগরে। সেই হিসাবে গেল ৯ মাসে আন্দোলন হয়েছে ৫৫৫টি।
ভুক্তভোগীরা জানান, দাবি আদায়ের এসব আন্দোলনে কার্যত জিম্মি হয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এ অবস্থা থেকে কবে মিলবে মুক্তি, তা জানে না কেউ।
ডিবিসি/ এমএ