আবহাওয়া, বিবিধ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

আপনি কি জানেন: ১৮১৬ সালে বিশ্বজুড়ে আসেনি গ্রীষ্মকাল

ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

রবিবার ৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৫:৪২:৩৩ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

ইতিহাসের পাতায় ১৮১৬ সালকে "গ্রীষ্মকালবিহীন বছর" (The Year Without a Summer) বা "দারিদ্র্যের বছর" হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

এটি কোনো কল্পকাহিনী নয়, বরং এক ভয়ংকর বাস্তবতা। সে বছর উত্তর গোলার্ধের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে গ্রীষ্মকালের দেখা মেলেনি; জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় তুষারপাত হয়েছিল এবং জুলাই-আগস্ট মাসেও নদী-নালা বরফে জমে গিয়েছিল।

 

এর পেছনের কারণ ছিল পৃথিবীর অন্য প্রান্তে ঘটে যাওয়া এক ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

 

এই বৈশ্বিক জলবায়ু বিপর্যয়ের মূল কারণ ছিল ১৮১৫ সালের এপ্রিলে ডাচ ইস্ট ইন্ডিজের (বর্তমান ইন্দোনেশিয়া) মাউন্ট ট্যাম্বোরা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত। এটি ছিল মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং ধ্বংসাত্মক অগ্ন্যুৎপাতগুলোর মধ্যে অন্যতম।

 

এই অগ্ন্যুৎপাতের ফলে বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে প্রায় ১০০ ঘনকিলোমিটার ছাই, ধূলিকণা এবং সালফার ডাই অক্সাইডের এক বিশাল আস্তরণ তৈরি হয়। এই ছাইয়ের মেঘ পৃথিবীকে চাদরের মতো ঢেকে ফেলে এবং সূর্যের আলোকে পৃথিবীতে পৌঁছাতে বাধা দেয়।

 

এর ফলে বিশ্বজুড়ে গড় তাপমাত্রা প্রায় ০.৪-০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যায়, যা "আগ্নেয় শীতকাল" (Volcanic Winter) নামে পরিচিত।

 

তাপমাত্রা নাটকীয়ভাবে কমে যাওয়ায় এর প্রভাব ছিল মারাত্মক। ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকায় ফসল পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়, যার ফলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। খাদ্যের অভাবে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ডে দাঙ্গা শুরু হয়। 

 

এটিকে " পশ্চিমা বিশ্বের সর্বশেষ মহা-দুর্ভিক্ষ" হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়। এশিয়াতেও এর প্রভাব পড়েছিল-এ মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয় এবং দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়।

 

তথ্যসূত্র দ্য গার্ডিয়ান

 

ডিবিসি/এমইউএ

আরও পড়ুন