বাংলাদেশ, জেলার সংবাদ

আবারও ধরা পড়লো বিষধর সাপ ‘রাসেল ভাইপার’

মো. হামিদুর রহমান

ডিবিসি নিউজ

বুধবার ২৫শে সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:২৮:১৮ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

চাঁদপুরে আবারও ধরা পড়েছে ‘রাসেল ভাইপার’ নামের বিষধর সাপ। মঙ্গলবার বিকেলে সাপটিকে চাঁদপুরের বন বিভাগ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেয়া হয়।

চাঁদপুর শহরের নিউ  ট্রাক রোড এলাকার গাজী বাড়ির শামীম গাজী ওরফে সামু নামের এক যুবক গত ১৯ সেপ্টেম্বর শহরের বড় স্টেশন মেঘনা নদীর তীরে কচুরিপানার উপর থেকে সাপটি ধরে। সাপটি লম্বায় প্রায় ৩ ফুট।

সামু জানায়, বড়স্টেশন এলাকায় স্থানীয় লোকজন সাপ দেখে চিৎকার দেয়। আমি স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় খাচায় ভরে সাপটি বাড়িতে নিয়ে যাই এবং বন বিভাগকে অবহিত করি। পরবর্তীতে জানতে পারি, এটি ‘রাসেল ভাইপার’ নামের বিষধর সাপ।

এর আগে, গত ১৯ আগস্ট দুপুরে চাঁদপুরে শহরের কোড়ালিয়া এলাকায় মেঘনা নদীর পাশে একটি পুকুর থেকে সবুজ নামের এক যুবক একই ধরনের আরেকটি সাপকে উদ্ধার করে। পরে ২০ আগস্ট চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের প্রতিনিধিদের হাতে হস্তান্তর করা হয়।

চাঁদপুর সামাজিক বনায়ন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা সাপের খবর পেয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের প্রতিনিধিদের খবর দেই। খবর পেয়ে তারা চাঁদপুরে আসেন। তাদের কাছে মঙ্গলবার সাপটি হস্তান্তর করা হয়। এটি চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটিতে রাখা হবে। তারা সেখানে গবেষণার কাজে লাগাবেন।

গবেষক দলের প্রধান মোহাম্মদ নোমান জানান, চন্দ্রবোড়া সাপটি অনেক বিষধর। এটি ভারত, চীন, থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশে আছে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের কিছু জেলায় এবং দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় সাপটির অস্তিত্ব মিললেও চাঁদপুরে এটি দ্বিতীয়বারের মতো ধরা পড়লো।

রাসেল ভাইপার একটি দুর্লভ সাপ। দেশের রাজশাহী, নাটর, নওগাঁ, দিনাজপুর, ফরিদপুর, শরীয়তপুর জেলায় এই ধরনের সাপ দেখতে পাওয়া গেলেও চাঁদপুরে এটি দেখা যাওয়ার কথা নয়। হয়তো বন্যার পানির সাথে ভেসে সাপটি এখানে এসে থাকতে পারে। 

নোমান জানান, রাসেল ভাইপারের কামড়ে বাংলাদেশে প্রথম ১৯৯৫ সালে এক সাওতাল মহিলা মারা যায়। তখনো বুঝা যায়নি কোন সাপে তাকে কামড়েছে। কিন্তু ২০১৩ সালে রাজশাহীতে ১৮ বছর বয়সী একটি ছেলে মারা গেলে এই সাপের অস্তিত্বের কথা প্রথম জানতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশে সাপের কামড়ে যত মানুষ মারা যায় তার মধ্যে রাসেল ভাইপারের কামড়েই অধিকাংশ মানুষ মারা যায়।

নোমান আরো বলেন, এটি কামড় বসালে এর বিষ খুব দ্রুত মানব দেহের রক্তে ছড়িয়ে পড়ে, হৃদপিন্ড অল্প সময়ে অকার্যকর হয়ে পড়ে। ২০১৩ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্তএই সাপটির কামড়ে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

চাঁদপুর সদর ইউএনও কানিজ ফাতেমা বলেন, আমরা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের প্রতিনিধিদের হাতে সাপটি তুলে দিয়েছি। তারা সেখানে গবেষণার কাজে লাগাবেন।

আরও পড়ুন